ইউরিক এসিড বাড়ে কেন?
আমাদের প্রত্যেকের শরীরেই স্বাভাবিক মাত্রায় ইউরিক এসিড থাকে। তবে সমস্যা হয় তখনই, যখন দেহে বেশি পরিমাণে ইউরিক এসিড তৈরি শুরু হয় অথবা কিডনি থেকে অতিরিক্ত ইউরিক এসিড বের হতে না পারে।
এ সময় হাঁটুসহ শরীরের বিভিন্ন অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে ইউরিক এসিড জমা হতে শুরু করে। অস্থিসন্ধি লাল হয়ে ফুলে যায়; ব্যথা শুরু হয়। এতে আক্রান্ত রোগীর হাঁটতে সমস্যা হতে পারে।
আমাদের শরীরে কোষের মধ্যে ডিএনএ রয়েছে। ডিএনএর মধ্যে আবার পিউরিন নিউক্লিওটাইড থাকে। আমরা যে আমিষ বা প্রোটিন খাদ্যদ্রব্য খাই, সেগুলো থেকেও পিউরিন পাওয়া যায়। এই কোষের মধ্যে থাকা পিউরিনের ভাঙনের কারণে শেষ উৎপাদন বা এন্ড প্রোডাক্ট হিসেবে ইউরিক এসিড তৈরি হয়। এই ইউরিক এসিড রক্তে চলে যায় এবং কিডনির মাধ্যমে বর্জ্য পদার্থ হিসেবে প্রস্রাবের সঙ্গে দেহ থেকে বের হয়।
ইউরিক এসিডের মাত্রা কেন বাড়ে?
শৈশব ও কৈশোরে রক্তে ইউরিক এসিড বেশি তৈরি হলে কিডনি থেকে সেটা সম্পূর্ণ নিষ্কাশিত হয় না। আবার থায়াজাইডের মতো কিছু কিছু ওষুধ প্রয়োগের কারণেও কিডনি থেকে ইউরিক এসিড বের হওয়াটা আটকে যায়। কাছের আত্মীয়দের কারো এই সমস্যা বা কিডনিতে পাথর, গাউটের সমস্যা থাকলে ব্যক্তির ইউরিক এসিডজনিত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে।
জিনগত সমস্যার কারণে ছোট বাচ্চাদের অতিরিক্ত ইউরিক এসিড তৈরি হতে পারে। বড়দের ক্ষেত্রে খাদ্যদ্রব্যের মাধ্যমে ইউরিক এসিড বাড়তে পারে। ডাল, লাল মাংস, চিংড়ি, কাঁকড়া, মাছের ডিম ও অ্যালকোহল খাওয়ার প্রবণতা বেশি হওয়ার কারণে ইউরিক এসিড বাড়ার আশঙ্কা থাকে।
এ ছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরল-ট্রাইগ্লিসারাইড এবং ডায়াবেটিস থাকলে ইউরিক এসিড বাড়তে পারে।
লেখক : সভাপতি, বিশুদ্ধ খাদ্য চাই এবং সহকারী অধ্যাপক, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, সাভার, ঢাকা।