ফ্যাটি লিভার ডিজিজের চিকিৎসায় কী করবেন?

Looks like you've blocked notifications!
ফ্যাটি লিভার ডিজিজ দূর করতে ওজন কমানো জরুরি। ছবি : সংগৃহীত

বর্তমানে ফ্যাটি লিভার বা চর্বিযুক্ত লিভার রোগে অনেককেই ভুগতে দেখা যায়। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রমের অভাব ফ্যাটি লিভার ডিজিজের কিছু কারণ।

ফ্যাটি লিভার ডিজিজের চিকিৎসায় করণীয় বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪০৩তম পর্বে কথা বলেছেন, ডা.জাহাঙ্গীর আলম। বর্তমানে তিনি স্কয়ার হাসপাতালে মেডিসিন বিভাগে পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : ফ্যাটি লিভার ডিজিজ হলে করণীয় কী?

উত্তর : আমরা অনেক রোগী এখন পাই ফ্যাটি লিভারের। কারণ, আল্ট্রাসাউন্ড করলে খুব সহজে চর্বি ধরা পড়ে। রোগী এসে বলে, আমার তো ফ্যাটি লিভার। রোগী আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।  আমরা লিভার  ফাংশন টেস্ট করি। মেটাবলিক স্ক্রিনগুলো করি। ডায়াবেটিস রয়েছে কি না দেখি, মেটাবলিক সিনড্রমের অন্য উপাদানগুলো রয়েছে কি না দেখি। রোগীর হেপাটাইটিস বি রয়েছে কি না, হেপাইটিস সি রয়েছে কি না দেখি। লিপিড অ্যাবনরমালিটিস রয়েছে কি না দেখি। এগুলোর কোনো বিষয় যদি আমরা পাই, তাহলে বলি যে কারণে সমস্যা হচ্ছে, সেটি কমানোর চেষ্টা করো।

মুটিয়ে যাওয়া বা ওবেসিটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কারণ ফ্যাটি লিভারের। আমরা বলি, আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করুন।

প্রশ্ন : ফ্যাটি লিভারের চিকিৎসায় নানা ধরনের ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। এ বিষয়ে আপনার পরামর্শ কী?

উত্তর : আসলে লিভারে চর্বি জমলে ফ্যাটি লিভার হবে। সুতরাং স্থূলতা কিন্তু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আপনার শরীরের ওজন থাকতে হবে আপনার উচ্চতা অনুযায়ী। ওজন কমালে দেখা যায় পাঁচ থেকে ১০ ভাগ লিভারের চর্বি কমে যায়।

এরপর জীবনযাপনের ধরন পরিবর্তন করতে হবে। ব্যায়াম ও পুষ্টির বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। জীবনযাপনের ধরনের মধ্যে যদি কিছুটা মদ্যপান করার অভ্যাসও থাকে, তাহলে বাদ দিতে হবে। এরপর দেখতে হবে পুষ্টির বিষয়টি। স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে। বিশেষ করে সতেজ খাবার ও সবজি খেতে হবে। চর্বি জাতীয় খাবারগুলোকে আমরা এড়িয়ে যাব। আর কারণের মধ্যে আমরা দেখব, তার কোলেস্টেরলের কোনো সমস্যা রয়েছে কি না, লিপড অ্যাবনরমালিটি রয়েছে কি না। বিশেষ করে ট্রাইগ্লিসারাইড, এজিএল এর সমস্যা  রয়েছে কি না দেখা হয়। আমরা রোগীকে বলব, ব্যায়াম করতে। রোগী যদি প্রতিদিন ৩০ মিনিটও ব্যায়াম করে, তাহলে দেখা যায়, তার এইচডিএল বেড়ে যায়, ট্রাইগ্লিসারাইড কমে যায়। 

প্রশ্ন : ফ্যাটি লিভার ডিজিজ প্রতিরোধে ব্যায়ামের বিষয়টি নিয়ে আপনার পরামর্শ কী ?

উত্তর : ওজন কমানোর ব্যায়াম ফ্যাটি লিভার দূর করতে উপকারী। বিশেষ করে যারা ব্যায়াম নিয়ে কাজ করে তাদের কাছ থেকে ব্যায়ামগুলো জেনে নিতে হবে। আমার একটি অনুরোধ থাকবে, ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে যাবেন। ঘরের খাবার খান। এখানে তেলের পরিমাণ কমিয়ে দেন। সতেজ ফল ও সবজি খাওয়ার চেষ্টা করুন।

প্রশ্ন : কী ধরনের ওষুধ দেওয়া হয়?

উত্তর : এখন আসি ওষুধের বিষয়ে। ওষুধ কিন্তু সেভাবে অনুমোদন হয়নি। কিছু ওষুধ কাউন্টারে রয়েছে। ডায়াটারি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে বাজারে রয়েছে। আমরা এগুলো লিখি। যাদের মারাত্মক ফ্যাটি লিভার রয়েছে বা সিওটো হেপাটাইটিস রয়েছে লিভারের কার্যক্রমে অস্বাভাবিকতা রয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে এগুলো দেওয়া হয়।কিছু ওষুধ বাজারের প্রচলিত রয়েছে ডায়াটারি সাপ্লিমেন্ট হিসেবে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে।

প্রশ্ন : কীভাবে আপনারা পরামর্শ দেন। তার সঙ্গে সঙ্গে কী কী চিকিৎসা চলতে থাকে?

উত্তর : ফ্যাটি লিভার থাকলে আল্টাসাউন্ড রিপোর্টে সাধারণত এটি দেখা হয়। তাহলে আপনি আতঙ্কিত হবেন না। ওজন কমালে অনেক সময় অনেক ফ্যাটি লিভার ঠিক হয়ে যায়। যাদের কিএটো হেপাটাইটিস রয়েছে, তাদের সচেতন থাকতে হবে। এই প্রদাহকে বন্ধ না করতে পারলে লিভার ফাইব্রোসিস হবে। লিভার শক্ত হয়ে সিসোরিস হবে। প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ২০ জনের সিরোসিস হতে পারে।