লো ব্লাড প্রেশার কখন বলবেন?

Looks like you've blocked notifications!
লো ব্লাড প্রেশারের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. মোহাম্মদ ফারহাদ উদ্দীন ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

লো ব্লাড প্রেশারের সমস্যায় অনেকেই ভুগেন। সাধারণত দেহের রক্তের চাপ কমে গেলে একে লো ব্লাড প্রেশার বলা হয়।

লো ব্লাড প্রেশার কী, কখন একজন মানুষের রক্তচাপকে কম বলা হয়, এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৪৫২তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. মোহাম্মদ ফারহাদ উদ্দীন। বর্তমানে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : রক্তচাপ বিষয়টি কী? মানুষের দেহের স্বাভাবিক রক্তচাপ কত হতে পারে?

উত্তর : প্রথমে আপনাদের ধন্যবাদ আপনারা খুব সুন্দর একটি বিষয় নির্বাচন করেছেন আজকে। এটি নিয়ে অনেক মানুষের মধ্যে অনেক ধোঁয়াশা রয়েছে। বিষয়টি হলো, লো ব্লাড প্রেশার। এর আগে আমি ব্লাড প্রেশার সম্পর্কে বলি।

আমাদের শরীরে রক্ত রয়েছে এবং রক্ত রক্তনালিতে প্রবাহিত হচ্ছে। যেকোনো তরল পদার্থে কিন্তু একটি চাপ থাকে, তেমনি রক্ত যেহেতু একটি তরল পদার্থ তারও চাপ রয়েছে। এ চাপটিকে বলা হয় রক্তচাপ। ইংরেজিতে বলা হয় ব্লাড প্রেশার। আমরা যদি রক্তচাপ মাপি, তাহলে একজন পূর্ণ বয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে দেখা যায়, সিস্টোলিক বা উপরেরটা থাকে ১০০ থেকে ১৪০ এর মধ্যে। এটাই স্বাভাবিক। আর ডায়াস্টোলিক বা নিচে যে রক্তচাপটা সেটা যদি ৬০ থেকে আশির মধ্যে থাকে, তাহলে একে আমরা স্বাভাবিক বলে ধরি।

প্রশ্ন : তাহলে লো ব্লাড প্রেশার বলতে আপনারা কোন অবস্থাটাকে ব্যাখ্যা করবেন?

উত্তর : লো ব্লাড প্রেশার বলতে বোঝায়, যদি আমি অঙ্ক দিয়ে বলি, তাহলে সিস্টোলিক ব্লাড প্রেশার যদি ১০০-এর নিচে থাকে, কিংবা কোনো কোনো গাইডলাইনে নব্বইয়ের নিচে বলা হয়, যদি নব্বইয়ের নিচে থাকে, তাহলে একে লো ব্লাড প্রেশার বলা হয়। সিস্টোলিক লো ব্লাড প্রেশার। আর ডায়াস্টোলিক লো ব্লাড প্রেশার বলতে বোঝায় যদি কারো ষাঠের নিচে থাকে, তাহলে একে ডায়াস্টোলিক লো ব্লাড প্রেশার বলা হয়।

কারো কারো বেলায় দেখা যায়, দুটোই কম। কারো কারো দেখা যায়, একটা স্বাভাবিক ও একটা কম। তখনও তাকে লো ব্লাড প্রেশার বলা যায়।

প্রশ্ন : লো ব্লাড প্রেশারের লক্ষণ কী?

উত্তর : আমাদের মধ্যে প্রেশার নিয়ে একটি ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। ধারণাটা এভাবে বলি যে, যত গর্জে তত বর্ষে না। আসলে যত মানুষ অভিযোগ করে, আমার লো ব্লাড প্রেশার, আসলে ততটা সত্য নয়। এটি হলো প্রথম কথা। কারণ, একটু আগে বলেছিলাম এর মধ্যে একটু কিন্তু রয়েছে, পড়ে বলব। সেটা এখন বলি। আসলে দেখা যায় যে অনেক মানুষের ক্ষেত্রে তার নিজিস্ব  ব্লাড প্রেশারটা একটু কমের দিকে রয়েছে। এটাই তার জন্য স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা যে একটি মাত্রা ঠিক করে রেখেছি, তাই একটু নিচে নেমে গেলে আমরা ভাবি কম হয়ে গেছে। হয়তো বা ওটাই তার জন্য সবসময় স্বাভাবিক ব্যাপার। যদি তিনি সব কাজ ঠিকঠাকমতো করতে পারেন, তাহলে সেটিই তার জন্য স্বাভাবিক ব্লাড প্রেশার। কিন্তু আমরা একটি মাত্রা জানি। তাই মাত্রা হিসেবে ভুল ভেবে বসে থাকি। এটি এক নম্বর।

দুই নম্বর হলো, হয়তো আমার এমনি ঘাড়ে ব্যথা করছে, এমনি মাথাব্যথা করছে, কিন্তু আমি আগে হয়তো কখনো ব্লাড প্রেশার মেপেছি। একটু কম পেয়েছি। আমি এখন ওর সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করি। বলি এই বোধ হয় আমার ঘাড়ব্যথা, মাথাব্যথা হয়েছে, আমার বোধ হয় ব্লাড প্রেশার লো হয়ে গেছে। সব সময় কিন্তু এটি সত্য নয়। দেখা যায়, অন্য অনেক কারণে মাথা ঘুরাতে পারে। মাথাব্যথা করতে পারে, ঘাড়ে ব্যথা করতে পারে। শুধু শুধু ব্লাড প্রেশারকে সবসময় দোষারোপ করা ঠিক নয়।