কেমন বালিশে ঘুমানো উচিত?

Looks like you've blocked notifications!
কোন বালিশ ব্যবহার ভালো। ছবি : সংগৃহীত

প্রায় নয় হাজার বছর আগে থেকেই ঘুমানোর সময় মানুষ বালিশ ব্যবহার করে। অন্তত মেসোপটেমিয়ার প্রত্নতাত্ত্বিক ইতিহাস সে কথাই বলে। মিসরীয়রা বালিশ হিসেবে পাথর ব্যবহার করত। নরম বালিশ ব্যবহার শুরু হয় গ্রিস ও রোমে। বর্তমানে ঘুমানোর অনুষঙ্গ হিসেবে বালিশের বিকল্প ভাবাই যায় না। তবে ঘুমানোর জন্য কোন ধরনের বালিশ ব্যবহার করা স্বাস্থ্যকর, এ বিষয়টি নিয়ে অনেকেই দ্বিধায় থাকেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বিভাগের ডিন অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ জানান, সঠিক বালিশের ব্যবহার বেশ গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। সঠিক বালিশের ব্যবহার না হলে ঘাড়, কাঁধ এসব অঙ্গে ব্যথা হতে পারে। বালিশ নির্বাচনে ফোম ব্যবহার না করে তুলার বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। বালিশ বেশি উঁচু হবে না, আবার খুব নিচুও হবে না।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিকেল অফিসার ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু বলেন, কে কীভাবে ঘুমায় সেটার ওপর নির্ভর করে বালিশ নির্বাচন করতে হবে। এমনভাবে বালিশ ব্যবহার করতে হবে যেন মেরুদণ্ড সোজা থাকে। সাধারণত বালিশের উচ্চতা চার থেকে ছয় ইঞ্চি হতে পারে। তবে শারীরিক গঠন অনুযায়ী বালিশের উচ্চতা বাড়তে পারে।

আমাদের দেশের বালিশগুলো সাধারণত শক্ত থাকে। এগুলো ব্যবহার ভালো। যেসব বালিশে মাথা একেবারে ডুবে যায়, সেগুলোর ব্যবহারে মেরুদণ্ডের অবস্থান ঠিক থাকে না। এগুলো তেমন স্বাস্থ্যকরও নয়।

ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সাধারণত আমরা তিনভাবে ঘুমাই। কেউ কাত হয়ে, কেউ চিত হয়ে এবং কেউ উপুড় হয়ে ঘুমাই। কাত হয়ে শুলে খেয়াল রাখতে হবে ঘাড় এবং কাঁধে যেন দূরত্ব থাকে। কাত হয়ে শুলে বালিশ একটু উঁচু হতে হবে। যেন মেরুদণ্ড একই লেভেলে থাকে। এ ক্ষেত্রে একটু শক্ত বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। এ ছাড়া কাত হয়ে শুলে দুই হাঁটুর মাঝখানে বালিশ দিয়ে শোয়া ভালো। এতে মেরুদণ্ড সাপোর্ট পাবে।’

ডা. হুমায়ুন কবীর হিমু আরো বলেন, ‘চিত হয়ে শুলে অনেকে মাথার নিচে দুটো বালিশ দেয়। এটি ঠিক নয়। এতে মাথা উঁচু হয়ে থাকে এবং কাঁধে ব্যথা হতে পারে। একটি বালিশ ব্যবহার করাই ভালো। এ ছাড়া চিত হয়ে শুলে হাঁটুর নিচে একটি বা দুটো বালিশ রাখা যেতে পারে। আর উপুড় হয়ে শুলে একটু পাতলা বা নরম বালিশ ব্যবহার করতে হবে; এই বালিশের উচ্চতা কম হলে ভালো হয়। যেন ঘাড় এবং মাথা কাছাকাছি থাকে।’

এক থেকে দেড় বছরের বেশি কোনো বালিশ ব্যবহার করা ভালো নয় জানিয়ে তিনি বলেন, দুই বছর হলে অবশ্যই বালিশ পরিবর্তন করা প্রয়োজন। উলের বালিশ, সিনথেটিক বা ফোমের বালিশ ব্যবহার করা উচিত নয়। এতে অ্যালার্জির সমস্যা হতে পারে। তুলার বালিশ ব্যবহার করা ভালো। যদি কোনো কারণে বালিশ বেশি নরম হয়ে যায় তখন সেটি পরিবর্তন করতে হবে। শোয়ার সময় মেরুদণ্ডের অবস্থান যেন সোজা থাকে সেটি খেয়াল রাখতে হবে।