শিশু অতিরিক্ত অস্থির ও চঞ্চল, বুঝবেন কীভাবে?

Looks like you've blocked notifications!
শিশুদের অতিরিক্ত অস্থিরতা ও চঞ্চলতার বিষয়ে আলোচনা করেছেন ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আজিজুল ইসলাম ও ডা. সানজিদা হোসেন। ছবি : এনটিভি

অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভ ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি) বা শিশুর অতিরিক্ত অস্থিরতা ও চঞ্চলতা একটি প্রচলিত সমস্যা। অনেকেই এ সমস্যায় ভোগে। তবে কখন শিশুর অস্থিরতাকে সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়?

এ বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩৫২৬তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আজিজুল ইসলাম। বর্তমানে তিনি আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মনোরোগ বিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত।

প্রশ্ন : এডিএইচডি কী?

উত্তর : অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপার অ্যাকটিভ ডিজঅর্ডার (এডিএইচডি)। এটা সাধারণত শিশুদের হয়। শিশু বলতে আমরা সাধারণত ছয় বছরের সময় পর্যন্ত রোগ নির্ণয় করি। এর আগে সাধারণত নির্ণয় করা হয় না। এর পরে নির্ণয় করা হয়। আমরা যদি বাক্যকে বিশ্লেষণ করি, তাহলে আমরা সবকিছু জেনে যেতে পারব। অ্যাটেনশন ডেফিসিট—শিশুটার কী থাকে না? মনোযোগ থাকে না এবং হাইপার অ্যাকটিভ থাকে। সব সময় অস্থির থাকে, চঞ্চল থাকে। আপনি কিন্তু এ বাচ্চাগুলোকে সহজেই ধরতে পারবেন।

প্রশ্ন : শিশুর এডিএইচডি কীভাবে বুঝবেন? বাচ্চারা এমনিতেই চঞ্চল হয়।

উত্তর : বাচ্চাটা যখন গেট দিয়ে ঢুকবে, সে তখন লাইনে দাঁড়াতে পারবে না। সে ফাঁক দিয়ে লাইন থেকে চলে আসবে। আপনি যখন তাকে নিয়ে কোনো অনুষ্ঠানে যাবেন, সে বসে থাকতে পারবে না। উঠে যাবে, ছটফট করবে। আপনি যখন ধরে রাখতে চাইবেন, তাও পারবেন না। সে ছটফট করছে। পড়তে যদি বসতে চায়, এক/ দুই মিনিট পর আর বসতে চাইবে না। পেনসিল ছুড়ে মারছে। আর সঙ্গে সঙ্গে হাইপার অ্যাকটিভ। এই বইটা ছুড়ছে, ওই পেনসিলটা ধরছে। ওই রাবার খেয়ে ফেলছে, ওই রাবার ছুড়ে ফেলছে। এই খেলনা ধরছে, ওই খেলনা ছুড়ছে। এ রকম কিছু করতে থাকবে। সুতরাং আমরা দেখছি, তার মনোযোগ ব্যাহত হচ্ছে।

প্রশ্ন : অনেক শিশুই তো রয়েছে একই জায়গায় বেশিক্ষণ থাকতে চাচ্ছে না। অস্থিরতা করছে। তাহলে তাদের থেকে এডিএইচডি শিশুদের আলাদা করার উপায় কী?

উত্তর : আমাকে প্রথমেই দেখতে হবে, এতে তার দৈনন্দিন কাজকর্মের ব্যাঘাত হচ্ছে কি না। এই অস্থিরতাটা দৈনন্দিন কাজকর্ম চলাফেরায় ব্যাঘাত করে কি না। এই যে অমনোযোগী বিষয়টি, এটি তার ক্লাসের পারফরম্যান্সে কোনো ব্যাঘাত ঘটাচ্ছে কি না। এই অস্থিরতা ও অমনোযোগিতা তার মা-বাবাকে কীভাবে আক্রান্ত করছে। যদি স্কুল থেকে রিপোর্ট আসে, আপনার বাচ্চা তো একদম মনোযোগ দেয় না, আপনার বাচ্চা তো সারাক্ষণ দৌড়াদৌড়ি করে, আপনার বাচ্চা স্কুলে রাখা যাবে না—মা যদি মনে করে এ বাচ্চার জ্বালায় আমি অস্থির হয়ে পড়ছি, আমার তো আগে দুটো বাচ্চা ছিল, তারা তো কখনো কোনো অসুবিধা করেনি, যখনই মা তাল সামলাতে পারবে না, যখনই মা মনে করবে, এই বাচ্চার আমার পক্ষে ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়, তখন বুঝতে হবে এটি ডিজঅর্ডার।

ডিজঅর্ডার বোঝার জন্য কিছু জিনিস বোঝা জরুরি। প্রতিদিন তার দৈনন্দিন কাজকর্মে ব্যাঘাত হচ্ছে, স্কুলে তার পারফরম্যান্স কমে যাচ্ছে, শিক্ষকরা অভিযোগ করছে, মা-বাবা অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছে, সহপাঠীদের সঙ্গে সে মিশতে পারছে না, সঠিকভাবে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে পারছে না। তখন বুঝতে হবে সম্ভবত সে ডিজঅর্ডারে রয়েছে।