ভালোবাসা দিবসের উৎসব ও স্বাস্থ্য সচেতনতা

Looks like you've blocked notifications!
উৎসবে খাওয়ার আনন্দ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করবে না। ছবি : সংগৃহীত

১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব মেতে উঠবে ভালোবাসা দিবসের আনন্দে। আর এই আনন্দকে ঘিরে অনেকেই অনেক রকম পরিকল্পনা করেছেন। উপহার দেওয়া-নেওয়া, খাওয়া-দাওয়া আর ঘোরাঘুরিতে মেতে থাকবেন সবাই। তবে সঙ্গে স্বাস্থ্যের দিকটাও খেয়াল রাখতে হবে।

দিনটি যেন সবাই সুস্থভাবে পালন করতে পারেন, তাই কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো।

শুরুটা যেন হয় স্বাস্থ্যকর

ঘুরে বেড়ানো আর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সারাটা দিন সবাইকে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই সকালের শুরুটা খুব স্বাস্থ্যকর হওয়া জরুরি। সকাল খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে একটু হালাকা ব্যায়াম বা ৩০ মিনিট হেঁটে নিলে ভালো। সারাদিন একটু বেশি  ক্যালোরি খাওয়া হতে পারে। তাই সকালটা শুরু করুন ব্যায়াম দিয়ে। সকালে দুধ, রুটি, সবজি এগুলো খেতে পারেন।

ভালোবাসা দিবসের কেক

ভালোবাসা দিবসে অনেকে কেক কেটে দিনটিকে উদযাপন করে থাকেন। তবে কেক খাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকেই আবার ক্যালোরির চিন্তা করেন। কিন্তু ভালোবাসা দিবস বলে কথা! কেক তো খেতে হবে। তবে পরিমাণটার দিকে খেয়াল রাখবেন। কেকের ক্রিমের অংশটা বাদ দিয়ে খেতে পারেন। উপরে ফল দিয়ে সাজানো কেকগুলো তুলনামূলকভাবে স্বাস্থ্যকর। অনেক রঙের কেক কেনা থেকে বিরত থেকে দুই বা তিন রঙের, বিশেষ করে হালকা রঙের কেক কেনা উচিত। কারণ এই কেকগুলো স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। নানা ধরনের কেকের মধ্যে ভ্যানিলা কেক বেছে নিতে পারেন।

ভালোবাসা দিবসের চকলেট

অনেকে ভালোবাসা দিবসে পছন্দের মানুষদের চকলেট উপহার দিয়ে থাকেন। তবে ডায়েট করলে অনেকে ভয় পান চকোলেট খেতে। ভালোবাসা দিবসে একটু চকোলেট না খেলে কি হয়? তবে এই ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় মেনে চলুন। বিস্কুট বা বাদামের সাথে যুক্ত চকলেটগুলোতে চকলেটের পরিমাণ একটু কম থাকে। কালো বা ডার্ক চকলেট স্বাস্থ্যের জন্য অনেক ভালো।তাই প্রিয়জনকে কালো চকলেট উপহার দেওয়া যেতে পারে। চকলেট কেনার আগে একটু নিউট্রেশন ফ্যাক্ট পড়ে নেওয়া যেতে পারে।

ভালোবাসা দিবসের আইসক্রিম

মজাদার আইসক্রিম ভালোবাসা দিবসের অন্য রকম আকষর্ণ। অনেকে কেক বা চকোলেট না খেয়ে আইসক্রিম খেতে পছন্দ করেন। আইসক্রিমের উপরে চকোলেট, চিপস বা সিরাপ এড়িয়ে যাওয়া ভালো।আইসক্রিমের সাথে ফল মিশিয়ে খেলে তা অনেক স্বাস্থ্যকর হয়। আবার কোণ বা কাপ আইসক্রিমের ক্ষেত্রে কাপ আইসক্রিম বেছে নিলে ভালো। এতে কোনের বিস্কুটের বাড়তি ক্যালোরি এড়ানো যায়। ভ্যানিলা আইসক্রিমের সাথে ফল মিশিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়।

ভালোবাসা দিবসের ডেজার্ট

ভালোবাসা দিবস উদযাপনে মিষ্টির রয়েছে এক বিরাট ভূমিকা। পরিবারের অনেকেই ভালোবাসাকে মিষ্টির সাথে তুলনা করে থাকেন। তবে একটু ক্যালোরি সচেতন যাঁরা তাঁরা ফুড কাস্টার্ড, পুডিং, দই, মিক্সড ফুড ইউথ আইসক্রিম ইত্যাদি উপভোগ করতে পারেন।

ভালোবাসা দিবসের উপহার

প্রিয়জনকে অনেকেই চকোলেট দিয়ে থাকেন এই দিবসে। কিন্তু স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে স্বাস্থ্য সম্মত উপহারও কিন্তু দেওয়া যায়।যেমন, চকোলেটের বদলে ফলের ঝুড়ি দিতে পারেন। আর কেকের বদলে বিস্কুট (লো ফ্যাট ক্যালোরি) দিতে পারেন।

বেছে নিন লাল রং

চেরি, স্ট্রবেরি, বেদানা, টমেটো, বিট, লাল ক্যাপসিকাম ইত্যাদি ভিটামিন এবং মিনারেলের খুব ভালো উৎস। এ ছাড়া এই খাবারগুলোতে রয়েছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এই খাবারগুলো শরীরের জন্য অনেক উপকারী। এই দিনে এই খাবারগুলো বেশি বেশি খেতে পারেন।

পরিমাণ বজায় রাখুন

ব্যুফেতে যেতে হলে খাবারের পরিমাণ ভালোমত বজায় রাখুন। রোল বা রুটি না খেয়ে সালাদ, মাংস বা মাছের মেনু, সবজি বা স্যুপ হতে পারে আপনার খাবার। আর খাবার খাওয়ার সময় ঝোল এড়িয়ে চলুন। কোল্ড ড্রিংকসের পরিবর্তে লেমনড বা চিনি ছাড়া ফলের রস খেতে পারেন। পরিমিত খাবার খেতে চামচ ব্যবহার করা যেতে পারে।

ভালোবাসা দিবসে ফাস্ট ফুড

ফাস্ট ফুডের মধ্যে বার্গার খেলে চিকেন বার্গার অর্ডার করা যেতে পারে। আবার সবজির স্যান্ডউইচ হতে পারে খুব ভালো অপশন। চিকেন ফ্রাইয়ের চেয়ে গ্রিল ভালো হবে। আর ফ্রেঞ্চ ফ্রাই এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয়। এ ক্ষেত্রে বেকড পটেটো খাওয়া যেতে পারে।

নিজেকে বঞ্চিত করবেন না

অনেকে ওজন কমানোর জন্য ডায়েটে থাকায় এই বিশেষ দিনটিতে খেতে সংকোচ বোধ করেন। ডায়েট করুন, তবে মনে রাখবেন কোনোভাবেই নিজেকে আনন্দ থেকে বঞ্চিত করবেন না। সামান্য একটু চকোলেট, কেক বা আইসক্রিম আপনার তেমন কোনো ক্ষতি করবে না একদিনে।

হাসিখুশি ভাব নিয়ে প্রিয়জনের সাথে আনন্দ করে দিনটিকে পালন করুন। তবে হ্যাঁ, সারাদিন পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পানের কথা ভুলে যাবেন না কিন্তু।

লেখক : প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল