পাকস্থলীর ক্যানসারের চিকিৎসায় কী করবেন

বিভিন্ন কারণে পাকস্থলীর ক্যানসার হয়। পাকস্থলীর ক্যনসার হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। এতে রোগ সম্পূর্ণ ভালো হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিনের ২৩৬৯তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সালমা সুলতানা।
urgentPhoto
প্রশ্ন : কোন কোন পর্যায়ে কোন কোন চিকিৎসা আপনারা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : প্রাথমিক অবস্থায় রোগী আমরা খুব কম পাই। জাপানে এর মাত্রা বেশি, তাই কোনো লক্ষণ হলেই অ্যান্ডোস্কোপি করে। এই জন্য আমি বলব, অনেকে যেমন পেটে কোনো সমস্যা হলে ওষুধ খেয়ে থাকেন, কিন্তু দেখা যায়, ভালো হচ্ছে না, একটা অ্যান্ডোস্কোপি করে নেওয়া ভালো। এতে দেখা যায়, পাকস্থলীর মধ্যে কিছু আছে কি না।
অনেকের দেখা যায় রক্তবমি হয়। অনেক সময় দেখা যায় পায়খানা কালো রঙের হয়। যদি কখনো কারো এ রকম হয় যে কালো রঙের নরম পাতলা পায়খানা হয় বা দুর্বলতা থাকে, তাহলে অ্যান্ডোস্কোপি করে নেওয়াটা সবচেয়ে ভালো।
প্রাথমিক অবস্থায় যদি পাকস্থলীর ক্যানসার আসে এর চিকিৎসা তো অবশ্যই অস্ত্রোপচার। অস্ত্রোপচার করলে রোগী সুস্থ হয়ে যাবে।
প্রশ্ন : অগ্রবর্তী পর্যায়ে কী করেন?
উত্তর : আমরা রোগীকে সাধারণত রোগ বেড়ে যাওয়ার পরই পাই, যখন টিউমার বড় হয়ে গেছে বা আশপাশে ছড়িয়ে গেছে। সেই ক্ষেত্রেও আমরা অস্ত্রোপচার করি। রোগী হয়তো অনেকদিন বেঁচে থাকে না। তবে যতদিন বেঁচে থাকে সুস্থভাবে যেন খাবার খেয়ে ব্যথামুক্তভাবে বেঁচে থাকতে পারে।
তখন আমরা পাকস্থলীর যে অংশে ক্যানসার হয়েছে সেটার ওপর থেকে নিচ পুরোটাই ফেলে দেই। প্রাথমিক অবস্থায় হোক বা দেরি করে হোক এরপর তার কিছু সহযোগী চিকিৎসা নিতে হয়। যাকে আমরা ক্যামোথেরাপি বলি।
প্রশ্ন : ক্যামোথেরাপি নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগীদের কিন্তু অনেক অনাগ্রহ থাকে। সেক্ষেত্রে আপনারা তাদের পরামর্শ দেন কীভাবে?
উত্তর : ক্যামোথেরাপি সব ক্যানসারে রোগীকেই একটি সময় দিতে হয়। একটা ধারণা আছে, আমার তো অস্ত্রোপচার হয়েই গেছে, আমিতো ভালোই আছি, এখানে আর ইনজেকশন দেওয়ার কী দরকার? আসলে জানার অভাব থেকে মানুষ এটা মনে করে।
অস্ত্রোপচার হওয়ার পর আমি বলি, দেখুন আপনার ৫০ ভাগ চিকিৎসা হয়েছে। বাকি ৫০ ভাগ হলো ক্যামোথেরাপি, সুস্থ হওয়ার জন্য আপনাকে নিতে হবে। নেওয়ার সময় একটু কষ্ট হবে। তবে নিতে হবে। নয়তো চিকিৎসা ব্যর্থ হবে। কারণ, ওই ক্যানসার সেখানে আবার হবে। ক্যানসারে যতগুলো কোষ আপনার বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, যেটি চোখে দেখা যাচ্ছে না। এগুলোকে মেরে ফেলা হবে এবং আপনি সুস্থ থাকবেন। আর নেওয়ার সময় আপনার খেতে অসুবিধা হবে, ওজন কমে যাবে। নারীদের সবচেয়ে বেশি সমস্যা হয়, চুল পড়ে যায়।
কে না সুস্থ হতে চায়? রোগীকে যদি বিষয়গুলো একটু পরামর্শ দিয়ে বুঝিয়ে দেওয়া যায়,ওনারা ক্যামোথেরাপি নেন। এ ক্ষেত্রে পরামর্শ একটি বড় বিষয়।
প্রশ্ন : পাকস্থলীর ক্যানসার প্রতিরোধে কী করবেন?
উত্তর : পাকস্থলীর ক্যানসার তো আসলে প্রতিরোধ করা যাবে না। ঝুঁকির কারণগুলো খেয়াল করতে হবে। খাদ্যাভ্যাস ঠিক থাকতে হবে। যেকোনো লক্ষণকে কখনোই ছোট করে দেখা যাবে না। পরীক্ষা নীরিক্ষা করে নিজে সুস্থ আছেন কি না, সেটা বুঝে নিতে হবে। যত প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় হবে আপনি সুস্থ হয়ে যাবেন।