সিওপিডি কী, এটি কেন হয়?
ক্রনিক অবসট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ বা সিওপিডি শ্বাসনালির জটিল একটি রোগের নাম। এ রোগে শ্বাসনালি ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয় কাশি সঙ্গে শ্লেষ্মা, শ্লেষ্মায় হলুদাভাব, মারাত্মক শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি। এই শ্বাসকষ্ট সহজে ভালো হয় না। এই রোগে আক্রান্ত রোগী একপর্যায়ে এসে কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। আমরা অনেকেই জানি ধূমপান সিওপিডি রোগের অন্যতম কারণ। তবে এর বাইরেও কিছু কারণ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েব এমডি জানিয়েছে সিওপিডির পাঁচটি কারণ।
ধূমপান
ধূমপান সিওপিডি রোগে আক্রান্ত হওয়ার অনত্যম প্রধান কারণ। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের তামাকজাত দ্রব্য গ্রহণের ফলেও এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যেমন : চুরুট, টোব্যাকো পাইপ ইত্যাদি।
পরোক্ষ ধূমপায়ী
হয়তো আপনি ধূমপান করেন না, তবুও ধূমপান করে এমন কারো সঙ্গে বসবাস করার কারণে সিওপিডি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।
বায়ু দূষণ
বায়ু দূষণ আরেকটি অন্যতম কারণ সিওপিডি রোগে আক্রান্ত হওয়ার। ক্যামিক্যালযুক্ত বাতাস, ধূলা এবং বিষাক্ত বায়ু উৎপন্ন হয় এমন পরিবেশে কাজ করলে সিওপিডি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
জিনগত কারণ
ডিএনএ বা জিনগত কারণে ৩ থেকে ১০০ জন রোগী সিওপিডিতে আক্রান্ত হতে পারে। এই সমস্যাকে বলে আলফা–ওয়ান এন্টি ট্রাইপসিন ডিফিসিয়েন্সি বা এএটি ডিফিসিয়েন্সি।এই সমস্যায় ফুসফুস তার ক্ষতি রোধ করার জন্য যথেষ্ট পরিমাণ প্রোটিন গ্রহণ করতে পারে না। যদি আপনার পরিবারের কোনো সদস্যের গুরুতর সিওপিডির সমস্যা থাকে তবে এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
অ্যাজমা
অ্যাজমার কারণে সিওপিডি হয় না তবে এই অ্যাজমার জন্য সিওপিডিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কখনো কখনো এর জন্য জীবননাশও হতে পারে।
কীভাবে সিওপিডি ফুসফুসের ক্ষতি করে
ফুসফুসের ভেতরে এক ধরনের ক্ষুদ্র থলি থাকে যাকে ইংরেজিতে এলভিয়োলি বলা হয়। যখন আমরা শ্বাস নেই সেটি বেলুনের মতো ফুলে উঠে। আবার শ্বাস বের হলে সেটি চুপসে যায়। যদি কেউ সিওপিডিতে আক্রান্ত হয় তখন ফুসফুসের এই ক্ষুদ্র থলি ঠিকভাবে কাজ করে না।
সিওপিডির ফলে এলভিয়োলির পর্দা ভেঙে যায়। বাতাস প্রবাহ স্ফীত হয়; সেখানে পানি এবং শ্লেষ্মা জমে। যখন বাতাস জমা হয় সেটি বের করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই রোগে শ্বাসপ্রশ্বাসের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সিওপিডি খুব ধীর গতিতে হয়। লক্ষণগুলো অনেক দেরিতে প্রকাশ পায়। যখন এটি রোগ হিসেবে প্রকাশ পায় তখন হয়তো বছর পার হয়ে গেছে। তাই সিওপিডি প্রতিরোধে জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা জরুরি।