কী থাকে পান্তা-ইলিশে

Looks like you've blocked notifications!
বিভিন্ন ভর্তা, ডালের চরচরির সঙ্গেও পান্তাভাত খাওয়া যেতে পারে। ছবি : দ্য ডেইলি লাইফ নিউজডটকম

বাঙালি ঐতিহ্যের অন্যতম একটি খাবার পান্তা-ইলিশ। পয়লা বৈশাখের দিন ঐতিহ্য পালন করতে অনেকেই এ খাবার খেয়ে থাকেন। চলুন জেনে নিই, কী পুষ্টিগুণ রয়েছে এই খাবারে।

পান্তাভাতের পুষ্টি

পুষ্টি বিবেচনায় পান্তাভাত কার্বোহাইড্রেট বা সিরিয়াল গ্রুপের খাবার, যা কার্বোহাইড্রেটের ভালো উৎস। ভাতে সারা রাত পানি দিয়ে রেখে একে পান্তায় পরিণত করা হয়। পানিসহ পান্তাভাত থেকে প্রচুর পরিমাণ ক্যালরি পাওয়া যায়। যাঁদের গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকে, তাঁরা সকালে পান্তাভাত খেতে পারেন। এটি দেহে ক্যালরির চাহিদা পূরণ করে, তবে বেশি খেলে মোটা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পান্তাভাত থেকে ভালো মাত্রায় ভিটামিন-বি পাওয়া যায়।

ইলিশ মাছ

ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি। এতে প্রচুর প্রোটিন ও মিনারেল রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড, যা হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, রক্তচাপ, ক্যানসার ও বিষণ্ণতার (ডিপ্রেশন) বিরুদ্ধে কাজ করে। এই মাছের সবচেয়ে বড় গুণ হলো, রান্না করা মাছ খুব সহজে হজম হয়ে যায়। সাধারণত ১০০ গ্রাম ইলিশে ২২ গ্রাম প্রোটিন ও সাড়ে ১৯ গ্রাম ফ্যাট পাওয়া যায়। এ ছাড়া ইলিশ মাছে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্যালসিয়াম ও আয়রন আছে। তবে পুষ্টির বিবেচনায় ইলিশে যে প্রোটিন রয়েছে, তা অন্য মিঠাপানির মাছ থেকেও পাওয়া যায়। ইলিশের তুলনায় মিঠাপানির মাছে কম পরিমাণ সোডিয়াম থাকে, যা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো।

অতিরিক্ত দামের আশঙ্কায় অনেকেই বৈশাখের তিন-চার মাস আগে ইলিশ কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে থাকেন। যদি সঠিকভাবে সংরক্ষণ না হয়, তবে এটি স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে। ভালো তাজা ইলিশ না পাওয়া গেলে বিকল্প হিসেবে ছোট মাছের চরচরিও কিন্তু খাওয়া যেতে পারে। এই খাবারের পুষ্টিগুণ বেশ ভালো। এ ছাড়া বিভিন্ন ভর্তা, ডালের চরচরির সঙ্গেও পান্তাভাত খাওয়া যেতে পারে। বৈশাখের সকালে চিড়া, দই, দুধ, মুড়ি, কলা, খই ইত্যাদিও খেতে পারেন।

পয়লা বৈশাখে সুস্থতা

পয়লা বৈশাখে যেহেতু সারা দিন ঘোরাঘুরি করা হয় এবং অনেক ধরনের খাবার খাওয়া হয়, তাই ওই দিন নিজেকে সুস্থ রাখতে কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন।

আগের দিন হালকা খাবার খাওয়া ভালো এবং রাতে আগেভাগেই খাবার সেরে ফেলা ভালো। তাহলে বৈশাখে অন্যান্য খাবার খেতে সমস্যা হয় না।

পয়লা বৈশাখে যেহেতু অনেক ঘোরাঘুরি হয়, শরীর যাতে পানিশূন্য হয়ে না যায়, তাই তরল খাবার হিসেবে কাঁচা আমের রস, ডাবের পানি, বাঙ্গির শরবত, বেলের রস, ঘোল খুব উপকারী। এই দিন চা-কফি বা ক্যানের ড্রিংকজাতীয় পানীয় কম খাওয়াই ভালো। পান্তাভাতের পাশাপাশি চিড়া, দই, খই ও গ্রীষ্মের পাকা ফল খাওয়া যেতে পারে। অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে যাওয়া ভালো। যেহেতু বিচিত্র খাবার থাকে, তাই সব খাবার অল্প অল্প করে খেলে স্বাস্থ্যজনিত সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

লেখক : তামান্না চৌধুরী, প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।