দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধির চিকিৎসা পদ্ধতি

Looks like you've blocked notifications!
অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মঈন জান।

দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে এখন বহুল প্রচলিত কসমেটিক ডেনটিসট্রি। আজ ২০ মে এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২০৪১তম পর্বে এ বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন মার্কস ডেন্টাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের কনজারভেটিভ ডেনটিসট্রি অ্যান্ড এন্ডোডেনটিস্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মঈন জান।

প্রশ্ন : আমরা কসমেটিক শব্দটি সাধারণত ব্যবহার করি যেকোনো সৌর্ন্দয সম্পর্কিত বিষয়ের সঙ্গে। কসমেটিক ডেনটিসট্রি শব্দটি এখন অনেক শুনতে পাই। যদি একটু বলেন, কসমেটিক ডেনটিসট্রি মানে কী? এর আওতায় কী কী পড়ে?

উত্তর : কসমেটিক ডেনটিসট্রি এ যুগের একটি চাহিদা। এটি এখন পৃথিবীতে খুব জনপ্রিয়। সবাই চায় সৌন্দর্য আনতে, হাসিটা সুন্দর করতে, মুখের গঠনটা সুন্দর করতে। কসমেটিক ডেনটিসট্রি বলতে বোঝায়, আমাদের যে বিভাগ আছে, ওরাল সার্জারি, অর্থোডোনসিয়া, কনসারভেটিভ ডেনটিসট্রি, প্রসথোডনটিকস-এগুলো সবই কসমেটিক ডেনটিসট্রির আওতায় পড়ে। মনে করেন দাঁত আঁকাবাকা হলো, অথবা চোয়ালটা সামনের দিকে এগিয়ে এলো, তাহলে তো দেখতে সুন্দর লাগবে না। দাঁতগুলো ফাঁকা, দাঁতে হয়তো কোনো দাগ লেগে গেছে, অথবা দাঁতের গঠনই হয়তো ছোট হয়ে গেছে- এগুলোকে পুনর্গঠন করে সুন্দরভাবে আবার সঠিক অবস্থানে এনে যেভাবে হওয়া উচিত, সেভাবে করা হয়। একেই কসমেটিক ডেনটিসট্রি বলে।urgentPhoto

প্রশ্ন : আপনি বলছিলেন এগুলোর মধ্যে অনেকগুলো অংশ পড়ে। আপনারা কোন অংশটি নিয়ে কাজ করেন?

উত্তর : মাঝখানে যদি দাঁত ফাঁকা থাকে, অথবা কোনো কারণে প্রতিটি দাঁতের মধ্যে যদি গ্যাপ তৈরি হয়, এগুলো আমরা ঠিক করি। আরেকটি বিষয় হলো, আমাদের দাঁতের অনেক সময় রং নষ্ট হয়ে যায়। রক্তপাত হয়ে এ সমস্যা হয়, এনামেলের গঠনে সমস্যা হলে এ সমস্যা হতে পারে, ডেনটিনের গঠনের সমস্যায়, আবার যদি টেট্রাসাইক্লিন অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়, বিশেষ করে নারীর গর্ভাবস্থায়-তখন এগুলো থেকে দাঁতের রং কালো হয়ে যেতে পারে। দাগ পড়তে পারে। অথবা আঘাতপ্রাপ্ত হলে, দাঁতটি ক্ষতিগ্রস্ত করে কালো করে ফেলে। সেই ক্ষেত্রে আমরা ব্লিচিং চিকিৎসায় যাই। আমরা এটাকে সঠিক রঙে নিয়ে আসি।

প্রশ্ন: যেকোনো কারণেই হোক দাঁতের রং যদি নষ্ট হয়ে যায় তার জন্য করণীয় কী?

উত্তর : ধূমপান বা পান খাওয়ার ফলে যদি সমস্যা হয়, সে ক্ষেত্রে আমরা স্কেলিং পলিশিং করে থাকি। আর যদি দেখি বিষয়টি দূর করার না, তখন কম্পোজিট ফিলিং করি। ওপরে একটা লেয়ার দিয়ে করে দিই। আজকাল যে ম্যাটেরিয়াল আছে এগুলো দাঁতের রঙের সঙ্গে একদম এক হয়ে যায়। বিভিন্ন শেড রয়েছে। দাঁতের সঙ্গে সাধারণত যেই শেডটা যায়, তা দিয়ে ফিলিং করে দিই।

প্রশ্ন : ফিলিংয়ের প্রসঙ্গে যদি একটু বলেন। একটা সময় ফিলিং ছিল মেটালিক, এটি কালো হতো, যেটা মার্কারি এবং অ্যালোয় মিলিয়ে করা হতো। এখন আমরা শুনছি কসমেটিক ফিলিংয়ের কথা। এই বিষয়টি কী? সব দাঁতের সব জায়গায় কি কসমেটিক ফিলিং দেওয়া যায়?

উত্তর : বর্তমানে এখন নতুন যে ফিলিংয়ের জিনিসগুলো রয়েছে, এগুলো আগের থেকে অনেক ভালো। আমরা যে খাবার চিবাই, সেই শক্তিটাও তারা নিতে পারে। যার ফলে আমরা এমালগামের পরিবর্তে এই ফিলিং দিতে পারি। যেকোনো দাঁতে এই ফিলিং দিলে আমাদের কোনো সমস্যা হয় না। এটি কর্মক্ষম থাকে এবং সুন্দরও থাকে।

প্রশ্ন : মেটালিক ফিলিংয়ের থেকে কালার ম্যাচিং বা কসমেটিক ফিলিংয়ের সুবিধা কী? আমরা জানি যে কালার ম্যাচিং বা কসমেটিক ফিলিংয়ের খরচ বেশি। তাহলে কেন এটা দেব?

উত্তর : প্রথম সুবিধা হলো সুন্দর লাগা। বোঝাই যায় না এখানে কোনো ফিলিং করা হয়েছে। আরেকটি বিষয় হচ্ছে যে পদ্ধতিটা ঝামেলাপূর্ণ না বা সময় বেশি লাগে না।

ধরুন, যদি এমালগাম ফিলিং করা হয়, এটি ধরে রাখার জন্য অনেক কিছু লাগে। তবে এই  ফিলিং এমনিতেই আটকে যায়, কেমিক্যাল লক হয়ে যায়। তার ফলে যতটুকু অংশ কালো হয়েছে, ততটুকু ঠিক করে দিলেই সুন্দর ফিলিং হয়ে যাবে।

প্রশ্ন : ফাঁকা দাঁত হলে সেই ক্ষেত্রে কসমেটিক ফিলিংয়ের ভূমিকা কী?

উত্তর : ফাঁকা দাঁতের নির্দিষ্ট একটি পরিমাণ আছে, দুই মিলিমিটার। এর বেশি হলে আমরা হয় অর্থোডোনটিক চিকিৎসা অথবা ক্রাউন ব্রিজ করি। তবে এর মধ্যে থাকলে সুন্দরভাবে একদম ম্যাটেরিয়াল দিয়ে এমনভাবে ফিলিং করে দিই যে ফাঁকাটা বন্ধ হয়ে যায়। বোঝাই যায় না যে ফাঁকা ছিল।

প্রশ্ন : এখন ডেনটিসট্রির ক্ষেত্রে লেজারের ব্যবহার হচ্ছে। লেজারের ব্যবহারটা কী এবং কোথায় করা হয়?

উত্তর : দাঁত ক্ষয়ের চিকিৎসা লেজার দিয়ে করা যায়। ব্লিচিংও লেজারের মাধ্যমে করা যায়। লেজারের সাহায্যে আপনি নরম টিস্যু, শক্ত টিস্যু কাটতে পারেন। কোনো রোগীর রক্তপাত হবে না। এর অনেক সুবিধা আছে। যার ফলে এটি কিছুদিনের মধ্যে অনেক প্রসার লাভ করেছে।