ডেঙ্গু ভাইরাসে প্লাটিলেট কমলে করণীয় কী?
ডেঙ্গু হচ্ছে ভাইরাসজনিত জ্বর। দিন দিন ডেঙ্গু বেড়েই চলছে। হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছে নতুন রোগী। মশার মাধ্যমে ছড়ায় বলে, আমাদের সব সময় চারপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে। আজ আমরা একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছ থেকে ডেঙ্গু ভাইরাসে প্লাটিলেট সম্পর্কে জানব।
এনটিভির নিয়মিত স্বাস্থ্যবিষয়ক অনুষ্ঠান স্বাস্থ্য প্রতিদিনের একটি পর্বে ডেঙ্গু ভাইরাসে প্লাটিলেট বিষয়ে কথা বলেছেন বাংলাদেশ মাল্টিকেয়ার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুল আজিজ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ডা. মুনা তাহসিন।
বিভিন্ন ধরনের জ্বর বিশেষ করে যেগুলোর মধ্যে ব্যাকটেরিয়াল কারণ রয়েছে। যেমন টাইফয়েড জাতীয় এই সমস্ত জ্বরগুলোর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ওষুধ ব্যবহার করার ফলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে। তাই এই ধরনের ভাইরাল জ্বর গুলোর চিকিৎসার গাইডলাইন কেমন এবং ওষুধ ব্যবহারের সতর্কতার বিষয়গুলো কি, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার আরাফাত বলেন, ডেঙ্গু ভাইরাসের জন্য সরাসরি কোনো ওষুধ নেই। কিন্তু ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখে চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ রোগীর জ্বর হলে জ্বর কমাতে হবে এবং ডিহাইড্রেশন হলে ডিহাইড্রেশন কাটাতে হবে। এ ছাড়া রোগীর অন্যান্য জটিলতাগুলোকে প্রতিরোধ করতে হবে। জটিলতার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে–রক্তজমাট বাধা, রক্তক্ষরণ হওয়া ইত্যাদি। তাই এসব জটিলতাগুলো নিয়ন্ত্রণ রাখতে হবে। রোগীর ডায়েট ঠিক রাখতে হবে। রোগীকে গুরুতর অবস্থা থেকে রক্ষা করতে হবে। এটাই হচ্ছে চিকিৎসার পলিসি। সরাসরি কোনো ওষুধ দেশে এখনো আবিস্কার হয়নি।
ডেঙ্গু নিয়ে মানুষের মধ্যে বেশকিছু ভ্রান্ত ধারণা পরিলক্ষিত হয়, সেগুলো কি কি, সঞ্চালকের এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার আরাফাত বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি যে, এই ধরনের রোগীরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্লাটিলেট বা অনুচক্রিকা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন থাকে এবং এটি তাড়াতাড়ি পরিবর্তন করার জন্য তারা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। আসলে দেখা যাচ্ছে, অনুচক্রিকা বা প্লাটিলেট ১০ হাজারের নিচে না নামলে রোগীর কোনো সমস্যা হয় না। প্লাটিলেট পাঁচ হাজারেও কোনো সমস্যা হয়না। তবে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নির্দেশিকায় বলা আছে প্লাটিলেট ২০ হাজারের নিচে নামলে প্লাটিলেট দিতে বা বাড়াতে হবে। এর আগে চিন্তার কিছু নেই। রোগীর সবচেয়ে খারাপ দিক হচ্ছে– লিকেজ বা শকড। ডেঙ্গুর শকডকে প্রতিরোধ করাই চিকিৎসকদের মূলমন্ত্র। এজন্য রোগীর শকড যাতে না হয়, বিষয়টি মনে রাখতে হবে। তার যদি সবসময় বমি ও পেটে ব্যথা হয় এবং খাবার খেতে পারছে না। সেক্ষেত্রে এগুলো হচ্ছে সতর্কতামূলক সংকেত। রোগীর জন্য সতর্কতা সংকেত খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই এগুলোর বিষয়ে আমলে নিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। এজন্য এই বিষয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। তাই প্লাটিলেটের বিষয়ে বেশি জোর দেওয়া ঠিক না।
একজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকা অবস্থায় বা বাসায় মনিটরিং থাকা অবস্থায় প্রতিদিন একটি সিবিসি বা প্লাটিলেটের গণনা দেখার জন্য বারংবার এই টেস্ট করানো হচ্ছে। এর প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, এই সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে উপরের ভিডিওটি সম্পূর্ণ দেখুন। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এনটিভি হেলথ ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং জানুন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ।