লাইভ ফ্রাইড আইসক্রিম!

অনেকেই কিছুটা অবাক হতে পারেন, আইসক্রিম আবার ফ্রাই হয় নাকি! ফ্রাইড কথা শুনেই অনেকের মাথায় আগে চলে আসবে ফ্রাইড চিকেন, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা এমনই সব লোভনীয় খাবারের কথা। তবে এবার আপনাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেব ফ্রাইড আইসক্রিমের। থাইল্যান্ডের এই আইসক্রিম পার্লারটির নাম ডিপসিডোস।
গুলশান-১ ডিসিসি মার্কেটের পরই জারার শোরুম। ঠিক এর উল্টো দিকের গলি ধরে কিছুদূর এগিয়ে গেলেই পেয়ে যাবেন এই ভিন্ন ধরনের আইসক্রিম পার্লারটি।
ভেতরে ঢুকলেই দেখতে পাবেন আইসক্রিম ভাজার কাজ। দক্ষ কারিগররা ব্যস্ত আইসক্রিম বানাতে। একটি বড় সমতল কড়াইয়ে চলছে এই কাজ। তবে সেখানে নেই আগুন। যেটার ওপর আইসক্রিম তৈরি হচ্ছে, সেটা আসলে সেকেন্ডে মাইনাস ৩৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় দুধ, চকলেট এবং অন্যান্য উপকরণকে রূপ দিচ্ছে আইক্রিমে। দুটি খুন্তির সাহায্যে পুরো কাজটা করা হয়। খুন্তির টুং-টাং শব্দ শুনে আপনার মনে হতে পারে, কড়াইয়ে বিফ রান্নার কাজ চলছে। এভাবেই তাঁরা আইসক্রিম তৈরির পুরো কাজটি করেন পার্লারের ক্রেতাদের সামনেই।
ডিপসিডোসয়ের কর্ণধার সৈয়দ আজিজুর রহমান। তিনি এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আইসক্রিম বানানোর এই পদ্ধতি বেশ মজার, একই সঙ্গে স্বাদেও রয়েছে ভিন্নতা।’ আইসক্রিম বানানোর এই পদ্ধতি থাইল্যান্ডের। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নিয়ে এসেছেন তাঁরাই। তবে দুধ, চিনি এবং অন্যান্য উপকরণকে আইসক্রিমে রূপ দেওয়ার কাজটি শিখেছেন ইউটিউব থেকে। তিনি আরো বলেন, ‘অনেক ঘুরে চীন থেকে মেশিন কিনি। এর পর শুরু করি ইউটিউব দেখে আইসক্রিম বানানোর কাজ। তবে যত যা-ই করি না কেন, তা আর আইসক্রিম হয় না। হতাশা দেখে আমার ছোট বোনও যোগ দিল এই সংগ্রামে। পরে তার দেওয়া রেসিপিতেই প্রথম খাওয়ার যোগ্য আইসক্রিম তৈরি করলাম।’
কর্মীদের আইসক্রিম বানানোর প্রশিক্ষণও দিয়েছেন তিনি নিজেই। এখন এখানে পাওয়া যায় মোট ১৩টি স্বাদের আইসক্রিম। তবে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় ট্রিপল চকলেট ট্রিট। এর দাম ৩০০ টাকা। অন্যগুলোর দাম ২০০ টাকা। আইসক্রিম পরিবেশনের ধরনটাও ভিন্ন। প্লাস্টিকের একবার ব্যবহারযোগ্য কাপের মধ্যে রোল করে দেওয়া হয় আইসক্রিমগুলো। তবে সরবেট আইসক্রিম দেওয়া হয় স্কুপ আকারে। সরবেট তৈরি হয় ফল দিয়ে। আর বাকিগুলো তৈরি করা হয় দুধ কিংবা চকলেট দুধ থেকে।
আইসক্রিমের মান সম্পর্কে আজিজুর রহমান বলেন, “এটি বাংলাদেশের একমাত্র ‘অর্গানিক’ আইসক্রিম। কারণ, আমরা কোনো প্রকার রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করি না। প্রয়োজনীয় সব উপকরণ প্রক্রিয়াজাত করা হয় আমার বাসাতেই। আর দুধ আনা হয় আমার বন্ধুর নিজস্ব খামার থেকে।”
এ বছরের ৬ জুন থেকে যাত্রা শুরু হওয়া পার্লারটি এরই মধ্যে অনেকের দৃষ্টি কেড়েছে। পুরো পার্লারে ৩০টি বসার জায়গা রয়েছে। আছে ওয়াই-ফাইয়ের ব্যবস্থা। ভিন্ন ধরনের আইসক্রিমের স্বাদ নিতে তাই আসতেই পারেন গুলশানের এই আইসক্রিম পার্লারটিতে।