সেইলরের আবহাওয়াবান্ধব উৎসবপোশাক
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2019/08/05/photo-1565000262.jpg)
বর্তমান সময়ে উৎসবের পোশাকে ট্রেন্ড ও ঐতিহ্য একসঙ্গে চোখে পড়ে। অর্থাৎ ঐতিহ্যবাহী পোশাক যেমন সালোয়ার-কামিজ ও পাঞ্জাবির কাট, প্যাটার্ন এবং ভ্যালু এডিশনে দেখা যায় ফিউশন।
বিশেষ করে আমাদের দেশে সালোয়ার-কামিজ বা থ্রি-পিসের প্রচলন বেশি। কারণ, পোশাকটি এ দেশের আবহাওয়া উপযোগী। পরা সহজ। আর সচ্ছন্দও। ঈদের সময়ও এই পোশাক সব বয়সীদের বেশি পরতে দেখা যায়। উৎসবের কামিজে ভ্যালু অ্যাডিশন বেশি থাকে। দেখা যায় দৃষ্টিনন্দন সব মোটিফের সমাহার। এমব্রয়ডারি, প্রিন্ট, কারচুপি, হাতের কাজে বসানো হয় বিভিন্ন নকশা। এর সঙ্গে যুক্ত হয় ট্রেন্ডি কাটের সালোয়ার। সবমিলিয়ে পোশাকের উপস্থাপনায় ফুটে ওঠে নতুনত্ব। অপরদিকে, রঙিন পোশাক এখন ট্রেন্ড। সালোয়ার-কামিজ বা মেয়েদের যেকোনো পোশাকেই ডিজাইনে রং বেশি প্রাধান্য পেয়েছে। নীল, কমলা, গোলাপি, লাল, হলুদ, সবুজ সব পরিচিত রঙেই সেজেছে ঈদের পোশাক।
দেশীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেইলরের চিফ অপারেটিং অফিসার রেজাউল কবির বলেন, ‘ঈদুল আজহা উপলক্ষে সেইলর তৈরি করেছে বিশেষ ঈদ কালেকশন। ওয়েদার ফ্রেন্ডলি বা আবহাওয়াবান্ধব পোশাকে সাজানো হয়েছে এই সংগ্রহ। কারণ এই সময়টা বৃষ্টি আর গরম দুটোই সমান্তরালে চলে। বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ থাকে অনেক বেশি। ফলে এই সময়ের উপযোগী কাপড়ের তৈরি পোশাক পরলে আরাম পাওয়া যায়।’
ট্রেন্ডপ্রিয় তরুণ তরুণীদের জন্যে শহুরে জীবনে সাচ্ছন্দ্যময় ও আরামদায়ক পোশাক প্রাধান্য পেয়েছে ঈদ কালেকশনে। মেয়েদের পোশাকে থাকছে ফিউশন স্ট্রিটওয়্যার ও রানওয়ে ইন্সপায়ার্ড কুর্তি। এথনিক, ডাবল লেয়ার, ওভারঅল ও ফ্লোরাল কুর্তিগুলোতে থাকছে ভিন্ন কাট ও প্যাটার্ন। এসব পোশাক তৈরি হয়েছে সিল্ক, হাফ সিল্ক ও রিংকেল-ফ্রি শিফনে। ঈদ পোশাকে এমব্রয়ডারিকেও প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কয়েক বছর ধরেই কুর্তা এ দেশের মেয়েদের ট্রেন্ডি পোশাক। লং ও সেমি লং কামিজ একই পথের যাত্রী, যা ট্রেন্ডের সঙ্গে অনেকটাই মিশে গেছে। কুর্তার কথা যদি বলা হয়, এই পোশাক এত জনপ্রিয় হওয়ার প্রধান কারণ এর ব্যবহারিক বৈচিত্র্য। মানে তা যেকোনো সালোয়ারের সঙ্গে মিলিয়ে পরা সম্ভব। এতে একেক রকম সালোয়ারের ক্ষেত্রে একেক লুক আসে। একই কামিজ দিয়ে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে পরা যায়। ফলে বৈচিত্র্যময় ফ্যাশনেবল লুক। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে কোটি। ট্রেন্ডি কোটিগুলোর রয়েছে নানা ধরন। লং, শর্ট, ফ্লোরাল ইত্যাদি। আবার কুর্তা থ্রি-পিস থেকে অনেক সাশ্রয়ী, অনেক সুবিধাজনক। কারণ একটি থ্রি-পিসের দামে তিনটি কুর্তা কেনা যায়। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে, এক থ্রি-পিসে একটি লুক আসবে, কিন্তু তিনটি কুর্তা কমপক্ষে তিনটি লুক দেবে। আর সালোয়ার ও কোটি পরিবর্তন করে তিন কুর্তা থেকে পনেরোটি ফ্যাশনেবল লুক আনাও সম্ভব। তবে প্রত্যেক ফ্যাশন সিজনেই কুর্তার মধ্যে আসছে কিছু নতুনত্ব। পাঁচ বছর আগের ডিজাইন থেকে কিছুটা হলেও পরিবর্তন দেখা যায় এখনকার ট্রেন্ডি কুর্তায়। সেক্ষেত্রে পরিবর্তন দেখা যায় রং, প্যাটার্ন ও কাটছাঁটে। সবমিলিয়ে ঈদে এ ধরনের পোশাকই সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
এখন বর্ষাকাল হলেও গরমের প্রকোপ কমছে না কিছুতেই। তাই কাট ও প্যাটার্নে নতুনত্ব তো চোখে পড়বেই। তেমনি কিছু ডিজাইনের মধ্যে ঢোলা, কার্ভ স্লিভ, বেল স্লিভ উল্লেখ্য। তবে এই ঈদে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়বে বেসিক প্যাটার্ন ও ফ্রক কাট। আর ট্রেন্ডি কামিজ বা টপসে সময়ের রং, দেশি মোটিফ এবং কৃষ্টি-সংস্কৃতির মিশ্রণে পরিলক্ষিত হয় এখন পারসিয়ান বা ইরানি লুক। ডিজাইন, চিত্রশিল্প, আলোকচিত্রের উৎসাহ হিসেবে ফুলের বৈচিত্র্য, বিশেষত্ব চিরকালীন। আর নারী ও ফুলের বিশেষ মিল রয়েছে সৃষ্টি থেকে। ফ্যাশনে তাই মেয়েদের ডিজাইনের চিন্তা সহজ করে দেয় ফুলেল মোটিফ এবং তা সবচেয়ে ভালো ফুটে ওঠে প্রিন্ট, এমব্রয়ডারির মাধ্যমে। মেয়েদের টপস, শর্ট কামিজ, টরসোর মতো পোশাকে ফ্লোরাল প্রিন্টের ব্যবহার তাই সম্পূর্ণ সময়োপযোগী। প্রিন্টে এ ধরনের ডিজাইন বেশি বাস্তব দেখায়। হাল ফ্যাশনে মেয়েদের পছন্দের পোশাকে দেখা মেলে তাই ফুলেল আয়োজন। বুনন বা টেকশ্চারে ডিজাইনের প্রধান ফোকাস বেশি দেখা যায় মেয়েদের লং কামিজে। আর চলতি ট্রেন্ডে বিশদে চোখে পড়ে ফ্লোরাল মোটিফের টেকশ্চার। লে আউটের নান্দনিকতায় পোশাকে ফ্লোরাল মোটিফ ভিন্ন শৈলী এনে দেয়। তবে অনেকটা স্ট্রেইট অথবা সিম্পল কাটের প্যাটার্নেই ভালো মানায় এই ধরনের টেকশ্চার। আর ভালো ডিজাইনে প্রয়োজন হয় কালার ম্যাচিং এবং কনট্রাস্টের। ফুলের বাইরে পরিলক্ষিত হয় জ্যামিতিক নকশা। অথবা অন্য কোনো প্রিন্ট। এ সময়ের ফ্রক প্যাটার্ন অথবা বেসিক প্যাটার্নের টপসে ব্যবহৃত মূল কাপড় দুটি। তা হবে, সুতি বা লিনেন। কোনোটি এ দুটির সংমিশ্রণে। মেয়েদের এই ধরনের পোশাকের সঙ্গে মানানসই হবে চাপা প্যান্ট। অর্থাৎ এমন টাইট প্যাটার্নের প্যান্ট বা সালোয়ার। তা হতে পারে লেগিংস বা গ্যাবার্ডিন কাপড়ের চিনোস। কিংবা ডেনিমের স্লিম ফিট প্যান্ট। তবে একটি জিনিস অবশ্যই মাথায় রাখা জরুরি, তা হচ্ছে, টপসের সঙ্গে প্যান্ট অবশ্যই মানিয়ে পরতে হবে। ট্রেন্ডে এখন এই দুয়ের কনট্রাস্ট চলমান। মানে, প্রিন্টেড টপসের সঙ্গে একরঙা চাপা প্যান্ট মানানসই। তাও যতটা সাধারণ রঙের মধ্যে সেরে ফেলা যায়, তত ভালো। এই যেমন সাদা, কালো, ইনডিগো।
ঈদে বরাবরই ছেলেদের প্রথম পছন্দ পাঞ্জাবি। পাঞ্জাবির প্রিন্টের দুই ধরনের প্রচলন লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রথমত স্ক্রিন প্রিন্টেড। এর জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি। এর আরেক সুবিধা হচ্ছে এতে নিজের ইচ্ছেমতো ডিজাইন বসানো বেশি সহজ। স্ক্রিন প্রিন্টের ডিজাইনে এই ঈদে বেশি চোখে পড়ে অলওভার বা সমগ্র পাঞ্জাবিতে প্রিন্ট। এতে নকশা হিসেবে বেশি ব্যবহৃত হয়েছে ফুলেল মোটিফ, জ্যামিতিক মোটিফের নানা প্রকার। ফুলেল বাইরে পাতা, ময়ূর, শাখা-প্রশাখা এবারের ঈদ ট্রেন্ডে ঢুকেছে। আবার অ্যাবস্ট্র্যাক্ট প্রিন্টও রয়েছে।
পাঞ্জাবির আরেক ধরন হলো কাপড়ের বুননে। অর্থাৎ, সুতো থেকে কাপড় বুননের সময়ই নকশা সম্পন্ন করা হয়। এটির বেলায়ও মোটিফ একই রকম। এই ঈদে মিশ্রণ পাওয়া যায় রঙিন ও সাদা-কালো পাঞ্জাবির। পাঞ্জাবিতে ট্রেন্ডি রং হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে লাল, নীল, সবুজ, মেরুন, মেটো ইত্যাদি। কিন্তু ক্ল্যাসিক ফ্যাশনে জায়গা পেয়েছে সাদা বা কালো রঙের পাঞ্জাবি। তাই রঙিনের পাশাপাশি সাদা ও কালোর মধ্যেও দেখা যাবে ঈদ পাঞ্জাবি সংগ্রহ।
আমাদের প্রকৃতিতে বছরজুড়ে চলে রঙের খেলা। সেই রং চলে আসে পোশাকের ক্যানভাসে। সঙ্গে বড় ভূমিকা পালন করে আবহাওয়া। প্রত্যেক ঋতুতে পরিবর্তন হয় আবহাওয়া এবং তাপমাত্রা। সময়টা এখন বর্ষাকাল হলেও কমছে না গরমের তীব্রতা। তাই এ সময়ের পোশাকে সাদা বা তার কাছাকাছি রঙের প্রাধান্যই বেশি লক্ষণীয়। তবে গরমে শুধুই সাদা বা তার কাছাকছি রং পরতে হবে এমন কোনো কথা নেই। এ সময়ের মেয়েদের ট্রেন্ডি রঙের মধ্যে আরো রয়েছে লাল, কমলা, হালকা সবুজ, হলুদের মতো রং। ছেলেদের বেলাতেও তা একই রকম। পরনের পোলো শার্ট বা শার্টটি হতে পারে একটু রঙিন। অথবা কয়েক রঙের মিশেলে চেক বা স্ট্রাইপ।
শীর্ষস্থানীয় ফ্যাশন ব্র্যান্ড সেইলরের চিফ অপারেটিং অফিসার রেজাউল কবির জানিয়েছেন, ঈদে পোলোতে বৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয়েছে সেইলর। টু টোন ইন্ডিগো পোলো, লাইক্রা পিকে পোলো, জ্যাকার্ড পোলোতে থাকবে ট্রপিক্যাল প্রিন্টের ডিটেইলিং। পোলো গরমের স্ট্রিট ফ্যাশনে ভিন্ন স্টাইল স্টেটমেন্ট তৈরিতে সাহায্য করবে।
এ ছাড়া টি-শার্টে ওয়াশ ভ্যারিয়েশন, প্রিন্টেড ও বিচ ডিটেইলিংও থাকবে। গরমকালের ঈদে এই টি-শার্টগুলো ইউনিক ক্যাজুয়াল লুক দেবে। ওয়াশ ইফেক্ট ও চেক ফেব্রিকের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে সেইলরের ক্যাজুয়াল শার্টগুলো। আর শতভাগ কটন জ্যাকার্ড ফেব্রিকে কারচুপি ও এমব্রয়ডারির ইসলামি মোটিফ ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেইলরের ঈদ পাঞ্জাবিতে, যোগ করেছেন তিনি।
ঈদ আয়োজনে বাড়তি পাওনা হিসেবে প্রতি বছরের মতো এবারও চলছে সেইলরের ফেস্টিভ্যাল সেল। গার্মেন্টস, জুয়েলারি, ব্যাগ ও জুতাসহ অন্যান্য সামগ্রীতে থাকছে ফ্ল্যাট ৩৫ শতাংশ ছাড়। ক্রেতাদের কথা মাথায় রেখেই প্রতি বছর এই বিশেষ সেলের আয়োজন করা হয়। সেইলরের সর্বমোট ১৩টি আউটলেট এবং ফেইসবুক পেইজে অনলাইন অর্ডারের মাধ্যমে এই ডিসকাউন্ট উপভোগ করা যাবে ঈদুল আজহার আগ পর্যন্ত।