এলিগেন্ট এল কিচেন

পরিপাটি রান্নাঘরে বর্তমানে জায়গা করে নিয়েছে ইংরেজি বর্ণমালার দ্বাদশ অক্ষর ‘এল’। এর সমকোণী জোড়ের অবিকল প্রতিরূপে তৈরি হচ্ছে হালের অভিনব সব রান্নাঘর। সুযোগ থাকলে আপনিও এই আধুনিক রান্নাঘর করতে পারেন ভিন্নমাত্রা আনতে।
এখনকার দিনে আলাদা করে চার দেয়ালে ঘেরা রান্নাঘর অনেকেই এড়িয়ে যান। দিনে দিনে লোপ পাচ্ছে সনাতনী ডাইনিং রুমের চিন্তাধারাও। একটা ছোট জায়গায় সবকিছু আঁটিয়ে নেওয়ার এই সময়ে ওপেন ফ্লোর প্ল্যানটাই ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। আর এই ওপেন ফ্লোর প্ল্যানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে এল শেপড কিচেনের জনপ্রিয়তা।
ইংরেজি এল বর্ণের মতো দেখতে এ রান্নাঘরে জরুরি অন্তত দুটি দেয়াল। সমকোণে স্থাপিত। দেয়ালের দৈর্ঘ্যের সমান্তরালে বাড়বে রান্নাঘরের দৈর্ঘ্য। এ ডিজাইনের রান্নাঘরগুলো বড় জায়গাজুড়ে তৈরি করা যায়। তবে ছোট কিংবা মাঝারি আকারের জায়গার জন্যই বেশি উপযুক্ত এল কিচেন। রান্নাঘরে এল-এর পা দুটো ১২ থেকে ১৫ ফুটের মধ্যে হলেই ভালো। এতে করে ঘরের পুরো জায়গাটা খুব কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যাবে। আর ছোট জায়গায় তৈরি করা এল শেপের কিচেনে ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গলের উপাদানগুলো অর্থাৎ চুলা, সিংক আর রেফ্রিজারেটর কাছাকাছি সেট করতে হয় বলে রান্নার কাজ করা সহজ হয়। সাশ্রয় হয় সময়। এ ধরনের হেঁশেলের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, খুব সহজেই ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গল সেট করে নেওয়া যায়।
এল-এর ছোট পায়ে তৈরি করে নেওয়া যেতে পারে ফ্লোর টু সিলিং কিচেন কেবিনেট। যার নিচের দিকে থাকবে ৩৬ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও ২৪ ইঞ্চি গভীর স্ট্যান্ডার্ড বেজ কেবিনেট আর ওপরের দিকে থাকবে ১৭ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের ১২ ইঞ্চি গভীর হ্যাংগিং ওয়াল কেবিনেট। সঙ্গে থাকুক কিচেনওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গলের যে কোনো একটি উপাদান। এখানে রেফ্রিজারেটর সেট করাই ভালো। কেবিনেটের যে কোনো কোণের শেষ মাথায় রাখুন রেফ্রিজারেটর। এতে জায়গা বাঁচবে।
এল-এর বড় পায়ে কিচেনওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গলের বাকি দুটি উপাদানের সঙ্গে যোগ হতে পারে আরো কিছু ওপেন সেলভিং ইউনিট। ফলে কিচেন খুব বেশি বদ্ধ মনে হবে না। স্টোরেজের জন্যও পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত জায়গা। যেখানে প্লেট, কাপ-পিরিচের সঙ্গে সাজিয়ে রাখতে পারবেন আপনার সাধের প্ল্যান্টার পট।
কাউন্টারটপে দৈর্ঘ্য ও প্রস্থে কমপক্ষে ১২ ইঞ্চি জায়গা রাখতে হবে চুলার জন্য। চুলার দুই পাশে অথবা একপাশে অন্তত ১৫ ইঞ্চি জায়গা ফাঁকা থাকা দরকার। এতে করে চুলা থেকে নামানোর পর তৈজসপত্র রাখার পর্যাপ্ত জায়গা পাওয়া যাবে। সিংকের আশপাশের কাউন্টার টপও খালি রাখা চাই। দুই পাশে অথবা একপাশে ২৪ থেকে ৩৬ ইঞ্চি জায়গা থাকা জরুরি। এতে করে থালাবাটি পরিষ্কার আর সংরক্ষণ করা হবে ঝামেলামুক্ত। কাটাকোটা আর ফুড প্রিপারেশনের জন্য ৪২ ইঞ্চি খালি জায়গা থাকতে হবে কাউন্টারটপে।
ট্র্যাডিশনাল থেকে ট্রেন্ডি যে কোনো ধরনের কালার স্কিমে রাঙানো যেতে পারে এল কিচেন। যাঁদের ক্লাসিক ডিজাইন পছন্দ, তাঁরা বেছে নিতে পারেন কোজি নিউট্রাল শেড কিংবা ধবধবে সাদা। আর রঙচঙে রান্নাঘর চাইলে কালার প্যালেটের যে কোনো রঙই বেছে নেওয়া যাবে। তবে তা যেন আপনার পুরো ঘরের কালার স্কিমের সঙ্গে মানিয়ে যায়। মানায় আপনার লাইফস্টাইলের সঙ্গেও। এ ধরনের কিচেনের আলোকসজ্জায় পেনড্যান্ট লাইটিং সবচেয়ে ভালো অপশন। এতে করে টাস্ক লাইটিং আর এমবিয়েন্ট লাইটিং দুটোর কাজই হয়ে যাবে। ফ্লোর থেকে উঠে আসা একসেন্ট লাইটিংও করতে পারেন মেঝের কোণগুলোতে। এতে রান্নাঘরের জৌলুস বাড়বে বহুগুণ।
কৃতজ্ঞতা : রসুই ঘর