বেনারসি শাড়ির ইতিহাস

বেনারসি এমন একটি শাড়ি যার প্রচলন যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। এই শাড়ি বাঙালি নারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। দাদী-নানী-মা-খাল-মেয়ে সব প্রজন্মের কাছেই বেনারসি খুবই পছন্দের পোশাক। এই শাড়ির ইতিহাস কয়েক শতাব্দী পুরানো। ভারতের উত্তর প্রদেশের বারাণসীর সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সাথে গভীরভাবে জড়িত বেনারসির ইতিহাস। বেনারসি শাড়িগু্লো তাদের ঐশ্বর্য, ডিজাইন এবং বিলাসবহুল কাপড়ের জন্য বিখ্যাত।
বেনারসি শাড়ির উৎপত্তি মুঘল যুগে হয়েছিল। চতুর্দশ শতাব্দীর দিকে। যখন এই উপমহাদেশে রেশম বুনন শিল্পের প্রচলন হয়েছিল। সে সময়ে, বেনারস রেশম উৎপাদন এবং তাঁতের একটি বিশিষ্ট কেন্দ্র হয়ে ওঠে এই উপমহাদেশে। মুঘল সম্রাট আকবর বেনারসি শাড়ির প্রচার ও পৃষ্ঠপোষকতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। যার ফলে এই শাড়ির জনপ্রিয়তা এবং স্বীকৃতি পেয়েছিল।
বেনারসি শাড়ি দক্ষ কারিগরদের প্রজন্মের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই শাড়িগুলো ঐতিহ্যগতভাবে খাঁটি সিল্ক সুতা ব্যবহার করে হাতে বোনা হয়। এর ডিজাইন জরি দিয়ে তৈরি করা হয়। যা সাধারণত সোনা বা রৌপ্যর সুতা দিয়ে করা হয়। এই শাড়িতে সাধারনত প্রকৃতি, উদ্ভিদ, প্রাণী, মুঘল শিল্প এবং জ্যামিতিক নকশা ফুটে ওঠে।
বেনারসি শাড়ি ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে আরও প্রাধান্য পেয়েছিল। কারণ এগুলো ধনী পরিবার এবং রাজদরবারের নারীদের জন্য চাহিদাসম্পন্ন পোশাক হয়ে ওঠে। ভারতীয় রাজকীয়তা এবং আভিজাত্য দ্বারা সজ্জিত বেনারসি শাড়িগুলো তাদের মর্যাদাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বেনারসি শাড়ি মর্যাদা এবং সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।
সময়ের সাথে সাথে, বেনারসি শাড়ি আরও বিকশিত হয়েছে। বর্তমানে, বেনারসি শাড়ি সিল্ক, অর্গানজা, জর্জেট এবং অন্যান্য কাপড় সহ বিভিন্ন ডিজাইনে পাওয়া যায়।
নারীরা বেনারসি শাড়িকে ঐতিহ্য এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির প্রতীক হিসাবে ধরে থাকেন। তারা নানা উৎসব উদযাপন এবং বিশেষ অনুষ্ঠানের সময় এই শাড়ি পড়ে থাকে। এই শাড়ি নারীর সত্যতা নিশ্চিত করে।
সূত্র- টাইমস অব ইন্ডিয়া