টেক্টরের সেঞ্চুরিতে কঠিন চ্যালেঞ্জের সামনে বাংলাদেশ
বৃষ্টির বাধায় প্রথম ওয়ানডেতে পুরোপুরি ব্যাটিং করতে না পারার আক্ষেপ ছিল আয়ারল্যান্ডের। সেই আক্ষেপ পূরণে খুব বেশি সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেই ব্যাটারদের দৃঢ়তায় বাংলাদেশকে নিজেদের ব্যাটিং সামর্থ্য দেখানোর পাশাপাশি চ্যালেঞ্জিং স্কোর দাঁড় করাল আইরিশরা। হ্যারি ট্যাক্টরের সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ৩২০ রানের কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে আইরিশরা।
আজ শুক্রবার (১২ মে) ইংল্যান্ডের চেমসফোর্ডের কাউন্টি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে নির্ধারিত ৪৫ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আয়ারল্যান্ড।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি করে উইকেট নেন হাসান মাহমুদ ও শরিফুল ইসলাম। তবে কমবেশি সবাই রান বিলিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময় দুপুর ৩টা ৪৫ মিনিটে খেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বৃষ্টির কারণে প্রায় ২ ঘন্টা পর সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হয় খেলা। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের প্রথম ওভারেই হারায় ওপেনার পল স্টার্লিংয়ে উইকেট।
হাসান মাহমুদের পঞ্চম বল মিড অনের ওপর দিয়ে তুলে মারতে যান পল স্টার্লিং। স্ট্যাম্প করিডোরের বলটি ব্যাটে লেগে উইকেটের পেছনে মুশফিকের গ্লাভসে ধরা পড়ে। যদিও আম্পায়ার শুরুতে আউট দেয়নি। তামিমের নেওয়া রিভিউতে দেখা যায় বল স্টার্লিয়ের ব্যাটে লেগেছে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে আউট দেন আম্পায়ারা। রানের খাতা খেলার আগেই সাজঘরে ফিরতে হয় স্টালিংকে।
তার বিদায়ের পর আরেক ওপেনার স্টিফেন দোহেনিকে নিয়ে চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বালবার্নি। যদিও তাদের সেই চেষ্টা অবশ্য সফল হয়নি। দ্বিতীয়বারের মতো আইরিশ শিবিরে আঘাত হানেন হাসান। দলীয় ১৬ রানে তার করা ব্যাক অফ লেন্থের ডেলিভারিতে গালিতে কাট করতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন দোহেনি।
দ্রুত জোড়া উইকেট নিয়ে আইরিশদের অল্প রানের ব্যবধানে গুটিয়ে ফেলার ছক কষলেও, সেই পরিকল্পনা ভেস্তে যায় বালবার্নি ও হ্যারি টেক্টরের ব্যাটিং দৃঢ়তায়। চাপ সামাল দিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন এই দুই ব্যাটার। গড়ে তোলেন ৯৮ রানের জুটি। কোনোভাবেই তাদের প্রতিরোধ ভাঙতে পারছিলেন না বাংলাদেশের বোলাররা।
অবশেষেই দলীয় ১১৪ রানে শরিফুলের করা ফুল লেন্থের ডেলিভারিতে ড্রাইভ করতে গিয়ে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বালবার্নি। আউট হওয়ার আগে করেন ৫৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস। তার বিদায়ের পর দ্রুতই আরও ২ উইকেট হারায় আয়ারল্যান্ড। দলীয় ১৩৮ রানে লোরকান ট্রাকার ও ১৬৭ রানে কার্টিস ক্যাম্ফারের উইকেট হারায় আইরিশরা। এবার বাংলাদেশের হয়ে ত্রাতার ভূমিকায় শরিফুল ও তাইজুল।
১৬৭ রানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে ফেলা আয়ারল্যান্ডকে চেপে ধরতে চেয়েছিল বাংলাদেশের বোলাররা। তবে তা হতে দেয়নি হ্যারি টেক্টর ও জর্জ ডকরেল। এই দুই ব্যাটার ফের বড় জুটি গড়ে বাংলাদেশকে উল্টো চাপে ফেলে। মাঝে ৯৩ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন নেন টেক্টর। এটি তার ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি।
সেঞ্চুরি হাঁকানোর পর বাংলাদেশের বোলারদের পাত্তা না দিয়ে ঝড়ো ব্যাটিং করতে থাকে টেক্টর। তার সঙ্গে যোগ দেয় ডকরেলও। এই দুইজনের ব্যাটিং নৈপুণ্যে শেষশেষ ৬ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৩১৯ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় আয়ারল্যান্ড।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
আয়ারল্যান্ড : ৪৫ ওভারে ৩১৯/৬ ( দোহেনি ১২, স্টার্লিং ০, বালবার্নি ৪২, টেক্টর ১৪০, ট্রাকার ১৬, ক্যাম্ফার ৮, ডকরেল ৭৪*, অ্যাডায়ার ১৯*; হাসান ৯-০-৪৮-২, শরিফুল ৯-০-৮৩-২, এবাদত ৯-১-৫৬-১, সাকিব ৯-০-৫৭-০, তাইজুল ৭-০-৫৯-১. মিরাজ ২-০-১৩-০)।