লড়াই করেও অস্বস্তি নিয়ে দিন শেষ করল বাংলাদেশ
ডারবানে দিনের প্রথম সেশন কেটেছে চরম হতাশায়। কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগানোর বদলে এই সেশনেই সবচেয়ে বেশি ভুগেছে বাংলাদেশ। এই সেশনে দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিং জুটিই ভাঙতে পারেনি বাংলাদেশ। তবে প্রথম সেশনের হতাশা পরের দুই সেশনে কিছুটা হলেও লাঘব হয়েছে। পরের দুই সেশন মিলিয়ে প্রোটিয়াদের ৪ উইকেট তুলে নিয়ে মোটামুটি ভালোয়-মন্দে টেস্টের প্রথম দিন পার করেছে মুমিনুল হকের দল।
যদিও দিনের শেষ দিকে বাংলাদেশের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন তেম্বা বাভুমা ও কাইল ভারানের জুটি। ৫৩ রানে জমে যাওয়া এই অপরাজিত জুটিই দিন শেষে বাংলাদেশের অস্বস্তির কারণ।
কিংসমিডে আজ বৃহস্পতিবার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টে আগে ব্যাট করতে নেমে ৪ উইকেটে ২৩৩ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিন শেষে উইকেটে অপরাজিত ছিলেন তেম্বা বাভুমা (৫৩) ও কাইল (২৭)।
আজ দিনের শুরুতে সাইট স্ক্রিন জটিলতা দেখা দেয় আর শেষে দেখা দেয় আলোর স্বল্পতা। সবমিলে প্রথম দিন খেলা হয়েছে মোটে ৭৬.৫ ওভার। ১৩.১ ওভার খেলা কম হয়েছে প্রথম দিনে।
তামিম ইকবালকে ছাড়া মাঠে নামা বাংলাদেশ এদিন টস জিতে বোলিং নেয়। মূলত বোলিং নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল ঘাসের উইকেটে শুরুর দিকে কন্ডিশনের সুবিধা কাজে লাগানো। কিন্তু প্রথম সেশনে সেই সুবিধার ছিটেফোটাও নিতে পারল না বাংলাদেশ। বরং উইকেটে জমে গিয়ে বাংলাদেশকে ভোগান দুই প্রোটিয়া ওপেনার ডিন এলগার ও সারেল এরউইয়া। বাংলাদেশের তিন পেসার ও এক স্পিনারকে প্রথম সেশনে বেশ ভোগান দুই প্রোটিয়া ওপেনার। ৯৫ রানে অবিচ্ছেদ্য থেকে শুরুর সেশন পার করেন দুজন।
দ্বিতীয় সেশনেও শতরানের জুটিতে দুজন আগাচ্ছিলেন। তবে এই জুটিকে আর বড় হতে দেননি খালেদ আহমেদ। এলগারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে প্রথম সাফল্য এনে দেন খালেদ। ৩৪তম ওভারে খালেদের ওভার দ্য উইকেটে করা ডেলিভারি অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে একটু বেরিয়ে যায়। কিন্তু হঠাৎ বাউন্স হয়ে যায়। তাতেই বিপদে পড়ে যান এলগার। বলটি লাফিয়ে এলগারের গ্লাভস ছুঁয়ে চলে যায় উইকেট কিপারের হাতে। ১১ বাউন্ডারিতে ১০১ বলে ৬৭ রানে আউট হন এলগার। ভাঙে ১১৩ রানের জুটি।
এলগারের পর অবশ্য এরউইয়াও আউট হন দ্রুত। তাঁকে বিদায় করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। পরের ওভারেই তাঁকে বোল্ড করেন এই অফ স্পিনার। এরউইয়ার প্রতিরোধ ভাঙে ৪১ রানে।
এরপর তিনে নেমে লড়াইয়ের আভাস দেন কিগান পিটারসেন। কিন্তু থিতু হওয়ার আগেই দুর্দান্ত থ্রোতে তাঁকে রানআউট করেন মিরাজ। তাসকিন আহমেদের বলে ড্রাইভ করে রান নিতে ছোটেন তেম্বা বাভুমা। পয়েন্ট থেকে একটু দৌড়ে গিয়ে বল থামান মিরাজ। এরপর দ্রুত উঠে বসে থাকা অবস্থায়ই থ্রো মারেন। বল গিয়ে সরাসরি লাগে স্টাম্পে। স্তব্ধ হয়ে ১৯ রানে ফিরে যান পিটারসেন। দ্বিতীয় সেশনে এই তিন উইকেটই বাংলাদেশের সাফল্য।
উইকেট নিয়ে শেষ সেশনের শুরুটা করেন ইবাদত হোসেন। অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা রায়ান রিকলটনকে বিদায় করেন তিনি। ৪১ বলে ২১ রান করে ফেরেন তিনি। এরপর এই সেশনে আর কোনো উইকেট নিতে পারেনি বাংলাদেশ। তার মাঝে আলোর স্বল্পতা দেখা দিলে কয়েক ওভার বাকি থেকেই প্রথম দিনের লড়াই শেষ করে বাংলাদেশ।
প্রথম দিন মোট বল হাতে ৫৭ রান দিয়ে এক উইকেট নেন মিরাজ। ৫৮ রানের বিনিময়ে একটি নেন খালেদ আহমেদ। আর ইবাদতও নেন একটি উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
দক্ষিণ আফ্রিকা : ৭৬.৫ ওভারে ২৩৩/৪ (এলগার ৬৭, এরউইয়া ৪১, পিটারসেন ১৯, রিকলটন ২১, তেম্বা ৫৩, কাইল ২৭; তাসকিন ১৮-৩-৫৮-০, ইবাদত ১৭-৬-৫৮-১, মিরাজ ২৬-৪-৫৭-১, খালেদ ১২.৫-০-৪৯-১, মুমিনুল ৩-০-৮-০)।