গ্রহের সেরা দল ভেবে নিজেদের সান্ত্বনা দিচ্ছে ব্রাজিল!
জোগো বোনিতো। বাংলায় যার মানে দাঁড়ায় ‘ফুটবল সুন্দর’। লাতিন ফুটবলের প্রেমে যারা পড়েছিলেন তাদের কাছে কমবেশি শব্দটি পরিচিত। আরও স্পষ্ট করলে, যারা ব্রাজিলের খেলা দেখেন তাদের কাছে এই ওপরের বাক্য দুটি আরও পরিচিত। কারণ, এই ব্রাজিলের খেলাকে দেখেই হয়তো মনের অজান্তে চলে আসতো একটি বাক্য। সেটি হলো—জোগো বোনিতো!
সাম্বা নৃত্যের তালে তালে ফুটবল ভক্তদের হৃদয় যুগ যুগ ধরেই জয় করে আসছিল ব্রাজিল। পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন বলে কথা! তার ওপর কিংবদন্তি পেলে থেকে শুরু করে জিকো, কাফু, রবার্তো কার্লোস, রিকার্ডো কাকা, রোনালদো, রোনালদিনহোদের খেলা কিংবা শেষ নেইমার-ভিনিদের খেলাও চোখ জুড়িয়েছে ভক্তদের। সেই ব্রাজিলই যেন এখন বড্ড অচেনা।
শেষ বিশ্বকাপ জিতেছে ২২ বছর আগে। শেষ ট্রফিও এসেছিল ৫ বছর আগে কোপা আমেরিকায়। তার আগে বড় ট্রফি বলতে সেই ২০১৩ সালে জেতা কনফেডারেশন কাপ।
সবমিলিয়ে বড় মঞ্চে শিরোপা জেতার জন্য দীর্ঘ অপেক্ষায় ব্রাজিল। গত ২২ বছরে এতগুলো বিশ্বকাপ খেলেও ধরা দেয়নি সোনার হরিণ। গেল বিশ্বকাপে কাতারে কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল ব্রাজিলকে। চলমান কোপা আমেরিকাতেও বিদায় কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে। ট্রফি জয় তো দূরে, সেরা চারদলের একটিও হতে পারেনি ব্রাজিল। মাঠের পারফরম্যান্সও চরম হতাশ করেছে ভক্তদের।
তাই তো কোপা আমেরিকা থেকে ছিটকে যাওয়ার পর তুমুল সমালোচনায় ভাসছে ব্রাজিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিয়মিত ট্রলের শিকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও আক্রমণের শিকার হচ্ছেন ফুটবলাররা।
দলের এই হতাশার সময়ে খেলোয়াড়দের উজ্জীবিত করতে সোশ্যাল মিডিয়াতে বার্তা দিয়েছে ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশন। এক ভিডিও বার্তায় ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসের গৌরবময় অধ্যায়গুলো তুলে ধরেছে তারা।
বিশেষ মুহূর্তগুলো তুলে ধরার পাশাপাশি ভিডিওতে বলা হয়. ‘এবারই নয়। তারা আগেও আমাদের শেষ ঘোষণা করেছিল। তবে বিশ্বাস করুন, আমরা আবারও জিতবো। আমরা এই গ্রহের সবচেয়ে সফল দল। পরাজয়ও আমাদের ইতিহাসের অংশ। আমরা যতবার জিতেছি, তার চেয়ে বেশি হেরেছি। এটা পরিসংখ্যান—আমরা ৫টি বিশ্বকাপ জিতেছি এবং হেরেছি ১৭টি। পরাজয়ই আমাদের ইতিহাস তৈরি করেছে। তারা একাধিকবার আমাদের শেষ দেখে ফেলেছে। কিন্তু মানুষ দেখেছে কে ছড়ি ঘুরিয়েছে! এক, দুই...পাঁচবার।’
একে একে পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়া মুখের কথা নয়। ব্রাজিল সেটা করেছে। তাদের ফুটবলে দুঃসময় এসেছে। সেটাকে দুমড়ে মুছড়ে ব্রাজিল ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আবারও চলছে দুঃসময়ের স্রোত। এই স্রোত সামলে আবারও ইতিহাস গড়বে সেলেসাওরা। আপাতত সেই অপেক্ষায় ব্রাজিল ভক্তরা।