কার্তিকের কবিতা
মাজুল হাসানের পঙক্তিমালা
গনগনে শীত
পৃথিবীর সব বই, বাসি পত্রিকা, ভূর্জপত্র, বাজারফর্দ,
তামাদি দলিল থেকে ণ-গুলো গিলে ফেলেছি,
লিপিকার তবু কি টের পাচ্ছি—পাতা গজানোর গন্ধ?
ফুল, মেরুবিচ্ছুরণ, পাখপাখালি সবাইকে বিদায় বলেছি
গোলাপ বললে মনে হয় প্লাস্টিক, মিথ্যা বসন্তের আর্জি
প্রকৃতি থেকে গ্রহণ করছি না কিছুই, শুধু ১টা শব্দ 'শীত'
লৌহদণ্ডে জমে যাওয়া শীত; গনগনে কোমল বিস্মৃতি...
হাঙর
শীত লিখতেই ঠকঠক শব্দে কলমের জ্বর এলো
মোরগফুলের মতো উদ্ধত জ্বর—
এই কথা জানাতেই কলম বলল, খুলে দাও—
ত্রিকালের জানালা-দরজাগুলো। সর্পনিদ্রাগ্রাম।
দ্বিখণ্ডিত চাঁদ। এখন কি হবে হিমচাঁপা'র?
মরদ তার পুরো রাজেন্দ্রপুর নিয়ে গুম হয়েছে
কুয়াশার ভেতর। কুয়াশার জ্বর। জানাকীর্ণ অন্ধকার...
জনাকীর্ণ
যত গভীরে গেছি লোকালয়, দেখেছি কুয়াশা, রৌদ্রবিদ্রূপ—
চেয়েছি ঘন শরীরে ফিনফিনে নিঃসঙ্গ আলোয়ান জড়ায়ে নিতে
বন্ধুপ্রতিম মেষপালক বলে দিয়েছে মুখের ওপর—‘তুমি চালিয়াত
যতই চুরি কর ভেড়ার লোম। তবু পাবে না এক ফোটা ওম’
সেই থেকে জনারণ্যে আমার প্রচণ্ড-প্রচণ্ড-প্রচণ্ড শীত করে…
শেফালিগাঁথা
হাত। উচ্চাভিলাষ। চমকায়
মিশেছে নিচু-শেফালি, মীন
আগুনের উপচ্ছায়া; পুষ্পঘায়
নেড়া আদিপাকুর, অক্ষরগাছ
মৃত্যু। শীতকাল। সুপ্রাচীন
পাখিরা খোঁজে প্রীতিদানা
সেইমতে শব্দ, ছায়াভূক
ছোট্ট পরকীয়া; মরদ-জেনানা
সূর্য, যেন দেবদূতসম
বর্ণবলয় এক, তৃতীয় প্রার্থনা
অতঃপর রোমশ কুয়াশা
বিম্বিত প্রাতবায়ু; রক্ত-ইট
জননেন্দ্রীয়, পাতকুয়া
সকালের বিলোল তামাশা
রক্তাভ। উভলিঙ্গ। কীট...