শাপলা সপর্যিতার দুটি কবিতা
টোটাল বাংলাদেশ
একের পর এক লাশ ফেলতে ফেলতে
দু-একটা আবার বেঁচেও যায়
কপালে মাথায় বুকে ২৬টি সেলাই নিয়েও জেগে ওঠে
বেঁচে ওঠে হেসে ওঠে বাংলাদেশ।
তা উঠুক, কিছু তো মরে। আর কিছু জীবিতের বুকে
রক্তহিম করা ত্রাশ হয়ে থাকে।
তাই থাকুক না। দেখছ না?
কেমন বিবেকের মুখে তালা লেগে যায় তাতে!
বন্ধ হয়ে যায় একের পর এক মানুষের মুখ!
মেয়েগুলো কেমন দামি শাড়ি পরে
ঠোঁটে চকচকে লিপস্টিক লাগিয়ে মোমবাতি জ্বালিয়ে
ফটো তোলে! ছবি আপলোড করে!
তারপর ঘুমোয় স্বপ্ন দেখে! ভোর হয়ে যায়!
এই ভাবতে ভাবতে চাপাতিতে ধার দেয় জল্লাদ
খামচে ধরে নতুন করে স্বাধীন পতাকা।
কিছু মানুষ আছে মাথার উপরদিকটা খোলা
আসমানের মতো।
অত আসমান কে চায়! কার দরকার!
বইগুলো সব বন্ধ থাকুক।
আঁধার হয়ে যাক এ বিপুল আলোর চোখ
উপড়ে ফেল সব, সব খোলা আসমান।
কিছু আছে মাথাটা বন্ধ। চোখ খোলা
কিন্তু বোবা কালার মতো
এই বন্ধ অন্ধকারে কোনো রা নেই তাদের
ওগুলোই থাক। সব রা বন্ধ করে থাক এই বাংলাদেশ।
আছি তো পরম সুখে মাথায় ছাতাও বেশ...
ভাবতে ভাবতে জল্লাদ সান দেয়
চকচক করে ওঠে রাতের জ্যোৎস্নায় চাপাতির ধার
তারপর ঠিক এক কদম এগিয়েই
বাগে পেয়ে যায় টোটাল বাংলাদেশ
নারায়ে তাকবির ......আল্লাহু আকবার
ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে
শত শত শত টুকরো বাংলাদেশ।
কে আছে?
কোথায়?
এ বিপুল অন্ধকারে!
আবাহন
প্রতিবাদী ঝড়ে উড়ে এসো তুমি
গলায় চাপাতির কড়াল কোপের মুখে
ঠোঁটে ঠোঁট ছুঁতে উড়ে এসো তুমি
যে পার সাজাতে শুদ্ধ আকাশে
ভালোবাসার জমিন...
শুধু সেই তুমি এসো
এসো জানাতে, শান্ত মাতৃভূমি এখন।
এসো জানাতে শহীদের ঋণ করে গেছ শোধ।
তুমি...
এসো, এসো পরিষ্কার করে দিয়ে যাও
আগাছা সকল।
লাল সূর্যের বুকে একে দিয়ে যাও
মাতৃমূর্তি আমার।
এসো ঝড় এসো
ভেঙে দিয়ে যাও আজকে
হৃদয়ের সব অচলায়তন।