ধর্ষণচেষ্টার মামলা না নিয়ে মারধর, এএসআইয়ের পর এবার ওসি প্রত্যাহার
মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় গিয়ে পুলিশের হাতে এক বাবা মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রাতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান বলেন, ‘পুলিশ বাহিনীর কোনো সদস্য অপরাধ করলে তার দায় পুলিশ বাহিনীর নয়। পুলিশের যে সদস্য অপরাধ করেছেন, ওই সদস্যকেই নিতে হবে।’
মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় গত শনিবার সন্ধ্যায় মেয়েকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে গিয়ে পুলিশের হাতে নির্যাতনের শিকার হন এক বাবা। পরে অভিযুক্ত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে নেওয়া হয়।
থানার ভেতরে বিচারপ্রার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমানের এক আদেশে শিবালয় থানার ওসি মো. শাহীনকে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে প্রত্যাহার করে মাদারীপুর জেলায় পাঠানো হয়েছে। ওসি মো. শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) অপু মোহন্ত।
ওসি মো. শাহীন চলতি বছর ২ ফেব্রয়ারি শিবালয় থানায় যোগদান করেছিলেন। ওসিকে শাস্তিমূলকভাবে মানিকগঞ্জ জেলা থেকে মারদারীপুর জেলায় সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া ঘটনার সময় থানায় কে কে উপস্থিত ছিলেন তাদের ভূমিকাও কী ছিল সব বিষয় তদন্ত করা হয়েছে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে।
ভুক্তভোগী ওই বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তার পাঁচ বছরের মেয়ে থাকে দাদীর কাছে। গত ২০ জুলাই শিবালয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. মান্নান খানের চাচাতো ভাই রজ্জব খান তার মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন শিশুটির দাদী। পরে স্থানীয় গণ্যমান্যদের জানানো হলেও প্রভাবশালী হওয়ার কারণে তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। উল্টো শিশুটির বাবাকেই নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
এরপর গত ১৪ আগস্ট শিবালয় থানায় এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও থানা থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত শনিবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে ওই ব্যক্তি তাঁর মা ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে থানায় যান। এ সময় থানার ওসি কক্ষে ছিলেন না। এএসআই আরিফ হোসেনের কাছে ঘটনা খুলে বলার পর তাকে থানার ভেতর মারধর করা হয়। রাতে পুলিশ সুপারের কাছে বিচার দিলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শিবালয় সার্কেল) নূরজাহান লাবনীর নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। ওই রাতেই অভিযুক্ত এএসআই আরিফ হোসেনকে থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়।