পি কে হালদারের তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার
বিদেশে পালিয়ে থাকা পি কে হালদারের তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় আজ মঙ্গলবার বিকেলে মতিঝিল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত এমডি সৈয়দ আবেদ হাসান, ভাইস প্রেসিডেন্ট নাহিদা রুনাই ও সিনিয়র ম্যানেজার রাফসান রিয়াদ চৌধুরী। প্রণব বলেন, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে কমিশনের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। তাঁদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।
গত ২৪ জানুয়ারি ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে কাগুজে প্রতিষ্ঠান 'আনাম কেমিক্যাল লিমিটেডের' নামে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণের নামে আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ২৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
গ্রেপ্তার তিনজন ছাড়া মামলায় পি কে হালদার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক এমডি মো. রাশেদুল হক, নয়জন বোর্ড সদস্য, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পি কে হালদারের অত্মীয় ও অন্য সহযোগীদের আসামি করা হয়। মামলার পর ওই দিনই রাশেদুল হক ও উজ্জ্বল কুমার নন্দীকে গ্রেপ্তার করে দুদক।
গত ২৫ জানুয়ারি আরও চারটি মামলা করে দুদক। 'ভুয়া ও কাগুজে' পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নামে পাঁচটি মামলায় ৩৫১ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন ও আত্মসাতের অভিযোগে পি কে হালদারসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়।
এ ছাড়া গত ৯ মার্চ ১০টি ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পি কে হালাদারসহ ৩৭ জনের বিরুদ্ধে আরও ১০টি মামলা করার অনুমোদন দিয়েছে দুদক।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নানা কৌশলে নামে-বেনামে অসংখ্য কোম্পানি খুলে শেয়ারবাজার থেকে বিপুল পরিমাণ শেয়ার কেনেন এবং ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ও পরে নিজের আত্মীয়, বন্ধু ও সাবেক সহকর্মীসহ বিভিন্ন ব্যক্তিকে পর্ষদে বসিয়ে অন্তত চারটি ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণ নেন।
এই চার কোম্পানি হলো ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (আইএলএফএসএল), পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স কোম্পানি (বিআইএফসি)।
এসব কোম্পানি থেকে পি কে হালদার ঋণের নামে বিপুল টাকা সরিয়ে বিদেশে পাচার করেছেন বলে তদন্তকারীদের অভিযোগ। এর মধ্যে আইএলএফএসএলের গ্রাহকদের অভিযোগের মুখে গত বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশ পালানোর পর দুদক তাঁর ২৭৫ কোটি টাকার ‘অবৈধ সম্পদের’ খবর দিয়ে মামলা করে।