বিটিআরসি চায় সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা, গ্রামীণফোনের প্রস্তাব ২০০ কোটি

ব্যবসায় বাধা দূর করতে গ্রামীণফোনের (জিপি) দেওয়া শর্ত মানলে পাওনা ২০০ কোটি টাকা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) দেওয়ার কথা আদালতকে জানিয়েছে সংস্থাটি। তবে গ্রামীণফোনের এই প্রস্তাব মনেনি রাষ্ট্রপক্ষ। তারা পাওনা টাকা ১২ হাজার ৫৮০ কোটির পুরোটাই দাবি করেছে। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ ১৮ নভেম্বর এ মামলার আদেশের জন্য দিন নির্ধারণ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চে শুনানি শেষে আদেশের জন্য এই দিন নির্ধারণ করা হয়।
গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস আদালতে বলেন, ‘গত ৩ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয় এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে আমাদের ব্যবসার বাধা দূরকরণে কিছু শর্ত দিয়েছি। তারা শর্তগুলো মানলে আমরা (গ্রামীণফোন) ২০০ কোটি টাকা দিতে রাজি আছি।’
তবে বিটিআরসির পক্ষে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম আদালতকে বলেছেন, বিটিআরসি গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটির পুরোটাই চায়। গ্রামীণফোনের কাছ থেকে যে প্রস্তাব এসেছে, তাতে তাঁরা রাজি নন। এর পাশাপাশি তিনি পাওনা টাকা আদায়ে হাইকোর্টের যে নিষেধাজ্ঞার আদেশ রয়েছে, সেটিও স্থগিত চেয়েছেন।
তবে আদালত থেকে বেরিয়ে বিটিআরসির আরেক আইনজীবী খোন্দকার রেজা-ই রাব্বী সাংবাদিকদের বলেন, ‘গ্রামীণফোনের কাছে পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে অর্ধেক টাকা দিতে সম্মত হলে আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি।’ এ অবস্থায় আদালত এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১৮ নভেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
এর আগে গত ২৪ অক্টোবর ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকার মধ্যে গ্রামীণফোন আপাতত বিটিআরসিকে কত টাকা দিতে পারবে, তা জানাতে বলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
গত ১৭ অক্টোবর গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির পাওনা ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা আদায়ের ওপর দুই মাসের অন্তর্বর্তীকালীন নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি আবদুল হাকিম ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। পরে এই আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিটিআরসি।
এর আগে প্রায় ২৭টি খাতে ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা দাবি করে গ্রামীণফোনকে গত ২ এপ্রিল চিঠি দেয় বিটিআরসি। এই চিঠির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে অর্থ আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা চেয়ে গ্রামীণফোন নিম্ন আদালতে একটি মামলা করে। এরপর গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত গ্রামীণফোনের অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন নামঞ্জুর করেন। পরে ওই নামঞ্জুর আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করে গ্রামীণফোন।
পরে ওই আপিলটি শুনানির জন্য গ্রহণ করে দুই মাসের জন্য গ্রামীণফোনের কাছ থেকে টাকা আদায়ে নিষেধাজ্ঞা দিলেন হাইকোর্ট।