রোহিঙ্গা নারীর হাতে জন্মসনদ, ইউপি চেয়ারম্যান কারাগারে

রোহিঙ্গা নারীকে জন্মসনদ দেওয়ার অপরাধে মানিকগঞ্জের এক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার মানিকগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমতাজ বেগম মতিয়ার রহমানের জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ওই রোহিঙ্গা নারীকে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার দিঘুলিয়া ইউনিয়নের বেংরোয়া গ্রামের আব্দুল হাইয়ের মেয়ে জান্নাত আক্তার, জন্ম তারিখ ১০ জুন ২০০০, দেখিয়ে একটি নাগরিক সনদ ও জন্ম সনদ প্রদান করেন ইউপি চেয়ারমান মো. মতিয়ার রহমান।
ভুয়া জন্ম সনদ দিয়ে রেজাউল করিম ওই রোহিঙ্গা নারীকে নিজের স্ত্রীর পরিচয় দিয়ে ২০১৯ সালে ১৩ নভেম্বর মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাসপোর্ট করতে যান। ওই পাসপোর্ট আবেদন পত্রে শনাক্তকারী হিসেবে আইনজীবী মনোয়ার হোসাইনের স্বাক্ষর রয়েছে। পাসপোর্ট করতে যাওয়া ওই নারীর কথাবার্তা সন্দেহ হলে মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট মো. মনিরুজ্জামান তাৎক্ষণিকভাবে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিবন্ধিত সার্ভার পরীক্ষা করেন। সেখানে দেখা যায় তিনি রোহিঙ্গা নারী। তাঁর নাম আসমা। তাঁরা বাবার নাম সিরাজুল হক। তাঁর রোহিঙ্গা নিবন্ধিত নম্বর ১৪৩২০১৭১২১৩১৫৪৪১৫। তাঁর জন্ম তারিখ ৫ জানুয়ারি ২০০১।
আসমার নাম ২০১৭ সালের ১০ অক্টোবর টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিবন্ধিত হয়। পরে ওই নারীকে তাঁর ভুয়া স্বামীসহ সদর থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
ঘটনার দিন ১৩ নভেম্বর রাতেই মানিকগঞ্জ সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দিঘুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান, ভুয়া স্বামী রেজউল করিম, পাসপোর্ট ফরমে স্থানীয় ব্যক্তি হিসেবে সত্যায়ন করার অপরাধে মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী মো. মনোয়ার হোসাইন ও ওই নারীকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলার বাদী মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সুপারিনটেনডেন্ট মো. মনিরজ্জিামান। পুলিশ ওই মামলায় চেয়ারম্যান ছাড়া বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করে।
এদিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়ার পর দিঘুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে আসেন। জামিন শেষ হয়ে যাওয়ার পর আজ বুধবার মানিকগঞ্জ জজ কোর্টে জামিনের আবেদন করেন। মানিকগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের বিচারক মমতাজ বেগম দুপুরে চেয়ারম্যান মো. মতিউর রহমানের জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।