সিনহা হত্যা মামলায় আজ চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ
অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় পঞ্চম দফার সেনা কর্মকর্তাসহ আরও চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল বিকেল ৩টায় পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন আগামী ২৫, ২৬ ও ২৭ অক্টোবর।
মামলার বিচারিক কার্যক্রমের পঞ্চম দফায় আজ যাদের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে তাঁরা হলেন, সেনা কর্মকর্তা লেফটেনেন্ট কর্নেল ইমরান, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সোহেল সিকদার, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) নজরুল ও কনস্টেবল শুভ পাল।
৩২তম সাক্ষী সেনা কর্মকর্তা ইমরানের সাক্ষ্যগ্রহণ মধ্য দিয়ে আজ এ মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। পরে আরও তিন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়। এ নিয়ে মোট ৩৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হলো।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জেলা কারাগার থেকে মামলার ১৫ আসামিকে কড়া পুলিশি পাহারায় আদালতে আনা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম জানান, আজ নয়জনের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য উপস্থিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু আসামি পক্ষের আইনজীবীদের অনীহার কারণে চারজনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়েছে।
এ ছাড়া মামলার দুই নম্বর সাক্ষী সাহেদুল ইসলাম সিফাতকে রিকল করার আবেদন করেছেন আসামি পক্ষের আইনজীবীরা।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় সে সময় সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্তকেন্দ্রের সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ নয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র্যাবকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করে। মেজর সিনহা নিহতের ছয় দিন পর লিয়াকত আলী ও ওসি প্রদীপসহ সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। পরে ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার অভিযোগে টেকনাফ থানায় পুলিশের করা মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে ঘটনার সময় দায়িত্ব পালনকারি আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর টেকনাফ থানার সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। গত ২৪ জুন মামলার অন্য পলাতক আসামি টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব আদালতে আত্মসমর্পণ করেন।
আসামিদের মধ্যে ওসি প্রদীপ ও কনস্টেবল রুবেল শর্মা ছাড়া অন্য ১২ জন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তদন্ত শেষে গত বছর ১৩ ডিসেম্বর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা তৎকালীন র্যাব ১৫-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল ইসলাম ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।