সীতাকুণ্ডে অগ্নিকাণ্ড : ফেসবুকে লাইভে এসে নিহত নয়নের বাড়িতে চলছে মাতম
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে গতকাল শনিবার রাতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় যারা ফেসবুকে লাইভ করে অগ্নিকাণ্ডের তথ্য জানাচ্ছিলেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে যারা কাজ করছিলেন, তাদের জানা ছিল না মৃত্যু অপেক্ষা করছে। সেখানে প্রথম যে শ্রমিক অলিউর রহমান নয়ন ফেসবুকে লাইভ করছিলেন, তিনিও জানতেন না। নিহত হয়েছেন তিনি।
দুর্ঘটনার সময় ঘটনাস্থলের একটু দূরে থেকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ করছিলেন নয়ন। হঠাৎ, ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তে আশপাশের সব কিছু অন্ধকার হয়ে যায়। তারপর থেকেই দীর্ঘসময় নিখোঁজ থাকেন তিনি। একপর্যায়ে তিনি মারা যান।
রাত আনুমানিক ২টার সময় নয়নের মরদেহ আসে চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে। তিনি মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ার উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের ফটিগুলী এলকার আশিক মিয়ার ছেলে।
পরিবারে চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে নয়ন বড়। দরিদ্র পরিবারের সন্তান হিসেবে প্রায় চার মাস আগে একই গ্রামের বাসিন্দা মামুন মিয়া ঠিকাদারের মাধ্যমে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে শ্রমিক হিসেবে কাজে যোগ দেন।
গতকাল রাতে চট্টগ্রামের বিএম কনটেইনার ডিপোতে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় ফেসবুকে লাইভে থেকে প্রায় ৪০ মিনিট পর্যন্ত আগুনের খবর দিচ্ছিলেন নয়ন। হঠাৎ, বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হলে তাঁর হাতের মোবাইল ফোন ছিটকে পড়ে যায়। এরপর চারদিকের আহাজারি, চিৎকার শোনা গেলেও তিনি কোথায়, কী অবস্থায় আছেন, তা জানা যায়নি। আজ সকালে পরিবারের কাছে খবর আছে নয়ন মারা গেছেন।
নয়নের মৃত্যুতে পরিবারসহ গোটা এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ভাগ্য বদলের জন্য চার মাস আগে চট্টগ্রামে যাওয়া বড় ছেলের মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বাবা আশিক আলী।
নয়নের চাচা সুন্দর আলী বলেন, ‘আমাদের গাড়ি নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে নয়নের লাশ আনতে রওনা করেছি।’