হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠানে বিদেশি মুদ্রা কেনা বেচা চলছে : সিআইডি
দেশে বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে ২৩৫টি। তবে, এর বাইরে অবৈধভাবে ব্যবসা করছে হাজারের বেশি প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে আরও কয়েকশ নামমাত্র প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার সদস্যরা ফোনে-ফোনে বা ব্যাগ কাঁধে ঘুরে ঘুরে অবৈধভাবে দেশি-বিদেশি মুদ্রা কেনাবেচা করছেন।
আজ বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া।
এর আগে মঙ্গলবার রাজধানীর পাঁচটি স্থানে একযোগে অভিযান চালিয়ে অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জের ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।
অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের বিএফআইইউ টিমের তথ্য ও সহযোগিতায় রাজধানীর গুলশান-১, রিংরোড, মোহাম্মদপুর, উত্তরার আশকোনা, এবি মার্কেট, চায়না মার্কেটে একযোগে পাঁচজন বিশেষ পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। এই পাঁচটি প্রতিষ্ঠানই বাংলাদেশ ব্যাংকের তালিকায় অবৈধ।’
মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ‘গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে এক কোটি ১১ লাখ ১৯ হাজার ৮২৬ টাকা সমমূল্যের ১৯টি দেশের বৈদেশিক মুদ্রাসহ সর্বমোট এক কোটি ৯৯ লাখ ৬১ হাজার ৩৭৬ টাকা জব্দ করা হয়।’ গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিজস্ব অফিস এবং ভাসমান যোগাযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই বৈদেশিক মুদ্রা কেনাবেচা করে আসছিলেন বলে জানান তিনি।
গ্রেপ্তারদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠান প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭০ থেকে ৭৫ লাখ টাকা সমমূল্যের বিদেশি মুদ্রা অবৈধভাবে কেনাবেচা করে আসছিল। সারা দেশে আরও এক হাজারের বেশি অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এদের কার্যক্রম সম্পূর্ণ অবৈধ।’
সাধারণ মানুষের কাছে অনুরোধ জানিয়ে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘যখন কোনো কাজে, চিকিৎসা নিতে কেউ বিদেশে যাচ্ছেন, তার আগে কিছু প্রসিডিউর আছে। ভিসা পাওয়ার পর বাংলাদেশের যেকোনো ব্যাংকে ভিসা দেখালে বিদেশি মুদ্রা পাওয়া যাবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা দিতে বাধ্য। তাহলে কেন তারা অবৈধভাবে ১০০ টাকার ডলার ১১৫ বা ১২০ টাকায় কিনবেন? এটি অন্যায় ও অবৈধ। আমরা এই অবৈধ কাজকে উৎসাহিত করতে পারি না। লাগবেই যখন তখন বৈধভাবে নেবেন, ব্যাংক কিংবা বৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান থেকে নেবেন। তাহলে ফুলে-ফেঁপে ওঠা এসব অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠান এমনিতেই বন্ধ হয়ে যাবে।’
এই অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ পাচার করেছে কি—না জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, ‘অল্প সময়ে অল্প পুঁজিতে বেশি আয়ের আশায় অবৈধ মানি এক্সচেঞ্জগুলো তৈরি হচ্ছে। অভিযানে অবৈধ পাঁচটি মানি এক্সচেঞ্জের মধ্যে তিনটির অফিস থাকলেও বাকি দুটো প্রতারণামূলক বা ফেরারি। তাদের লোকজন কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে মানি এক্সচেঞ্জ করতেন।’