জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আনান কমিশনের বৈঠক

রাখাইন অ্যাডভাইজরি কমিশনের তিন সদস্য কক্সবাজার উপকূলের বিভিন্ন স্থানে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে আজ দুপুরে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সমস্যা খতিয়ে দেখতে এবং সমাধানের জন্য জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে এই কমিশন হয়েছে। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে নয় সদস্যের এই কমিশন গঠিত হয়।
কমিশনের সদস্যরা আজ সোমবার দুপুর ২টায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পৌঁছালে কর্মকর্তারা তাঁদের স্বাগত জানান। পরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তাঁরা বৈঠক করেন। বৈঠকে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তারা কমিশন সদস্যদের সম্প্রতি বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের সম্পর্কে বিস্তারিত অবহিত করেন।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন জানান, কফি আনান কমিশনের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন মিয়ানমারের নাগরিক উইন ম্রা, আই লুইন ও লেবাননের নাগরিক ঘাসান সালামে।
এর আগে আজ সকাল ৯টায় কমিশনের সদস্যরা উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।
গতকাল রোববার সকালে কক্সবাজার পৌঁছে কমিশনের সদস্যরা উখিয়ার বালুখালী পাহাড়ে গড়ে তোলা এবং টেকনাফের লেদা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ৪০ জন নারী, ১৮ জন শিশু ও ১২ জন পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন। শরণার্থীদের কাছ থেকে মিয়ানমারে নির্যাতনের বর্ণনা শোনেন কমিশনের সদস্যরা।
গত বছরের ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর বেশ কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা হয়। এতে মিয়ানমার সীমান্ত পুলিশের ১২ সদস্য নিহত হন।
এই হামলার পর পরই রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর নির্যাতন চালায় মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। নির্যাতনে শতাধিক রোহিঙ্গা নিহত হয়। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, প্রায় ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত শনিবার কফি আনান কমিশনের তিন সদস্য ঢাকায় পৌঁছান।
আগামীকাল মঙ্গলবার কমিশনের সদস্যরা ঢাকায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের কথা রয়েছে।