দুঃসহ জীবন কাটাতে রাজি নয় কিশোরীরা

মুখ বুজে অধিকার হারানো আর দুঃসহ জীবন কাটাতে রাজি নয় কিশোরীরা। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে মুখ খুলতে শুরু করেছে তারা। নিজের তো বটেই, অন্যের বিয়ে ঠেকাতেও প্রতিবাদী হয়ে উঠেছে।
উন্নয়নকর্মীরা বলছেন, কিশোরীদের পাশাপাশি পরিবারও সচেতন হলে দ্রুতই উন্নয়ন ঘটবে বাংলাদেশের বাল্যবিবাহ পরিস্থিতির।
বাবা-মায়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে নিজের বাল্যবিবাহ ঠেকিয়েছিলেন ঝালকাঠির মেয়ে শারমিন আক্তার। আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছিলেন নিজের মা ও পাত্রকে। এই সাহসিকতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে পেয়েছেন সাহসী নারীর পুরস্কার। কিন্তু প্রত্যন্ত অঞ্চলের শারমিনের মতো সাহসী হয়ে উঠতে পারেনি ঢাকার শ্যামপুর ম্যাচ কলোনির রোজিনা এবং এই কিশোরী। মাত্র ১৫ বছর বয়সেই বিয়ে করে নিজেরাই ডেকে এনেছেন বিপদ।
তবে চোখের সামনে এসব দৃষ্টান্ত সতর্ক করে দিয়েছে কলোনির অন্য কিশোরীদের। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে উন্নয়ন সংস্থার সহযোগিতায় কলোনির সবাইকে সচেতন করার কাজে নেমেছেন তাঁরা।
এমন সচেতনতাসহ আরো কারণে গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহরে বাল্যবিবাহের হার কম। তবে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে পিছিয়ে নেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিশোরীরাও। শারমিনের মতো নীলফামারীর আর্জিনা নিজের বিয়ে ঠেকানোর পাশাপাশি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের অগ্রদূত হিসেবে ঘুরে এসেছেন নরওয়ে। অষ্টম শ্রেণি থেকেই যে ঝরে পড়তে পারত, সেই আর্জিনা এখন অনার্সের ছাত্রী।
আর মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী হিসেবে গড়ে তুলতে জলঢাকার আরেক মেয়ে গায়ত্রী রায় হয়ে উঠেছেন কারাতে মাস্টার। স্কুলপড়ুয়া কিশোরীদের আত্মরক্ষার কৌশল শিখানোর পাশাপাশি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধেও রাখছেন বড় ভূমিকা।
কিশোরীদের চেয়ে অভিভাবকদের সচেতনতা জরুরি উল্লেখ করে উন্নয়নকর্মী ও বিশ্লেষক তাহমিনা হক বলেন, বাবা-মায়ের কাছেই প্রথম নিশ্চিত হতে হবে সন্তান অর্থাৎ শিশুর অধিকার।
বাল্যবিবাহ নিয়ে মাকসুদুল হাসানের ধারাবাহিক ভিডিও প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব দেখুন। ক্যামেরায় ছিলেন রিপন মৃধা।