রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়াই একমাত্র সমাধান : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া এই সংকটের একমাত্র সমাধান।
আজ বুধবার কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
এর আগে সকালে বাংলাদেশ সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন দেশের দূতরা কক্সবাজারে যান। বাংলাদেশের পক্ষে ক্যাম্পগুলোতে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।
কূটনীতিকদের শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন ও রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার এই সংকট সৃষ্টি করেছে। তাই সংকট সমাধান করতে হবে তাদেরকেই। বাংলাদেশ চায় পরিস্থিতির শান্তিপূর্ণ সমাধান।
‘মিয়ানমারের এই আচরণে মানবতার যে ক্ষতি হচ্ছে, তাঁরা (কূটনীতিকরা) সেটা স্বচক্ষে দেখছেন। এর পাশাপাশি তাঁরা আরো ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন, তাঁরা তাঁদের সদর দপ্তরে বার্তাগুলো আশা করি পৌঁছাবেন যে, তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে নিতেই হবে। এটাই একমাত্র সমাধান’, বলেন শাহরিয়ার আলম।
‘…আমিও দেখেছি অনেককে কথা বলতে এবং গতকালকে আসতে গিয়ে এবং গত সপ্তাহে আসতে গিয়ে কী কষ্ট তাঁদের (রোহিঙ্গা) করতে হয়েছে, পরিবারে কতজনকে ফেলে এসেছেন, পরিবারের সদস্য নিহত হয়েছেন, এই তথ্যগুলো তাঁরা (কূটনীতিক) পেয়েছেন। সিইং ইজ বিলিভিং (দেখাই হলো বিশ্বাস করা)। বিলিভ সকলেই করতেন। কিন্তু আজকে দেখার পরে এটা আরো জোরালো হবে এবং সামনের দিনে আমাদের কাজ এবং কূটনৈতিক তৎপরতায় এটা সহায়ক ভূমিকা পালন করবে’, যোগ করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।
গত ২৪ আগস্ট রাতে রাখাইন রাজ্যে একসঙ্গে ২৪টি পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে হামলা হয়। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ) এই হামলার দায় স্বীকার করে।
এ ঘটনার পর মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। সেখান থেকে পালিয়ে আসার রোহিঙ্গাদের দাবি, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী নির্বিচারে গ্রামের পর গ্রামে হামলা-নির্যাতন চালাচ্ছে। নারীদের ধর্ষণ করছে। গ্রাম জ্বালিয়ে দিচ্ছে।
জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের তথ্য অনুযায়ী, মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে এখন পর্যন্ত তিন লাখ ৭০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসেছে।