পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নতুন নতুন এলাকায় বন্যা

গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হলেও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জ জেলার নতুন নতুন এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে। জেলার পাঁচ শতাধিক গ্রামে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পানিবন্দি ওই সব এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি ও গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। হাওর এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় গবাদি পশু নিয়ে মানুষ রাস্তায় অবস্থান নিয়েছে। আর নষ্ট হয়ে গেছে জেলার ১৫ হাজার হেক্টর কৃষিজমির রোপা আমন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এ বছর জেলার ১৫ হাজার হেক্টর রোপা আমনের ক্ষতি হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে কয়েক দফায় বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় রোপা আমনের বীজতলাসহ ব্যাপক ফসলের ক্ষতি হয়েছে।
এ ছাড়া তাহিরপুর-বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার-ছাতক ও সুনামগঞ্জ-জগন্নাথপুর উপজেলার সড়কের বেশির ভাগ রাস্তা পানির নিচে থাকায় সড়ক যোগাযোগের ব্যাহত হচ্ছে। মানুষ নৌকা নিয়ে সড়কপথ পাড়ি দিচ্ছে।
জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়ধল, দক্ষিণ বড়ধল, উত্তর শ্রীপুর, দক্ষিণ শ্রীপুর, বাগলী ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা, দোহালিয়া ও দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়ন, বিশ্বম্ভরপুরের শক্তিয়ারখলা, বাদাঘাট, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনাবাজার, ফেনারবাঁক ও জামালগঞ্জ সদর, ছাতক উপজেলার ইসলামপুর, উত্তর খোরমা, দক্ষিণ খোরমা, কালারুকা, শাল্লা এবং ধর্মপাশার প্রায় সব গ্রামেই পানি ঢুকে পড়েছে। তাহিরপুর বিশ্বম্ভরপুর সড়কটি বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
আর এই সাত উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হলো তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার ও ছাতক উপজেলা। এই তিন উপজেলার ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও স্কুলে পানি ঢুকে পড়েছে। তাই ওই সব এলাকার বিদ্যালয়ে পানি ঢুকে পড়ায় শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আর তাহিরপুরের উত্তর শ্রীপুর ও সূর্যেরগাঁও ইউনিয়নের ১০টি পরিবার বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
এদিকে নতুন করে দক্ষিণ সুনামগঞ্জের চারটি ইউনিয়ন ও জগন্নাথপুরের কয়েকটি ইউনিয়নে বন্যা দেখা দিয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মামুন হালদার জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে পাহাড়ি ঢলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা পানির বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।