বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ আদর্শ স্থান
বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ স্থান বলে দাবি করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ব্যবসায়ীদের অনুকূলে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার। গার্মেন্টস, পাট ও পাটজাতদ্রব্য এবং মাঝারি শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল আজ বাংলাদেশের মাটিতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে।
আজ শুক্রবার কলকাতার ময়দানে বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট ২০১৬-এ বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ এসব কথা বলেন। দুদিনব্যাপী এই সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের সঙ্গে বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সুসম্পর্ক রয়েছে। এ কারণে দুই দেশের মধ্যে আরো বাণিজ্য প্রসার ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী।’
উদ্বোধনী বক্তব্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে এখন আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও এখন শিল্প স্থাপনের উপযুক্ত পরিবেশ রয়েছে।’ পশ্চিমবঙ্গের কর্মসংস্কৃতিরও বদল ঘটেছে বলে দাবি করে তিনি বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সবার প্রতি বিনিয়োগের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘রাজ্যে বিনিয়োগ করার সুপরিবেশ রয়েছে। এ সময় মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গকে দক্ষিণ এশিয়ার প্রবেশপথ বলে আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘এখান থেকে বাংলাদেশ আধঘণ্টা, সিঙ্গাপুর দুই ঘণ্টা, ভুটান ও নেপালও প্রায় আধঘণ্টার পথ। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে পশ্চিমবঙ্গ। এখানে জমি ও বিদ্যুৎ পরিষেবার অভাব নেই। পাঁচ হাজার একর জমি শিল্পের জন্য প্রস্তুত। এক লাখ একর জমি ল্যান্ড ব্যাংক মজুদ আছে।’ ‘সামনে বিধানসভা নির্বাচন আসছে। আমরাই ফের পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় আসব। তাই বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভয় নেই। বিনিয়োগ করুন,’ আরো যোগ করেন মন্তব্য।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তোফায়েল আহমেদ কলকাতায় পৌঁছে জানান, বাংলাদেশ ও ভারতের শিল্পপতিরা যাতে দুই দেশে বিনিয়োগ করতে পারেন, সে জন্য এই সম্মেলনে আলোচনা করা হবে। তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে ৪৭ জনের এক বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশ নেন। গতকাল রাতে ইকো পার্কে তাঁর সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তোফায়েল, মমতা ছাড়া এই সম্মেলনে বক্তব্য আরো দেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, রেলমন্ত্রী সুরেশ প্রভু, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, যুক্তরাজ্যের শ্রমমন্ত্রী প্রীতি প্যাটেল, বিশিষ্ট শিল্পপতি মুকেশ আম্বানিসহ বিশিষ্টজনেরা। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র চীন, জাপান, ফ্রান্স, স্পেন, জার্মানি, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশের শিল্পপতিরা।
পশ্চিমবঙ্গে শিল্পের জোয়ার আনতে পাশে থাকার আশ্বাস দেন ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই শিল্পোদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পশ্চিমবঙ্গের হারানো গৌরব ফিরে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন। রিলায়েন্স গ্রুপের কর্ণধার মুকেশ আম্বানি বলেন, গত তিন বছরে রিয়ালেন্স গ্রুপ পশ্চিমবঙ্গে পাঁচ হাজার কোটি রুপি বিনিয়োগ করেছে। আগামী ২৪ মাসে এই রাজ্যের প্রতিটি স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালে হাইস্পিড ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।