নাফ নদে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবির খবর

কক্সবাজারে টেকনাফের নাফ নদে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে মিয়ানমারের বড়গজিরবিল গ্রাম থেকে একদল রোহিঙ্গা নৌকা নিয়ে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টার সময়ে নৌকাটি ডুবে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় জেলেরাও নিশ্চিত করেছেন নৌকাডুবির খবর। তাঁরা জানিয়েছেন, ডুবে যাওয়া নৌকায় ৩০ থেকে ৩৫ জন রোহিঙ্গা ছিল। আরোহীদের অধিকাংশই ছিলেন নারী ও শিশু।
নৌকাডুবির পর রেহেনা বেগম নামে এক নারী সাঁতার কেটে বাংলাদেশের জলসীমায় লালদিয়া দ্বীপে আশ্রয় নেন। আজ সোমবার ভোরে বাংলাদেশি জেলেরা মুমূর্ষু অবস্থায় ওই নারীকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে উদ্ধার হওয়া ওই নারী স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, টেকনাফের এক দালালের মাধ্যমে তাঁরা বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল। নৌকাটি ছোট হলেও অতিরিক্ত বোঝাই হওয়ায় নৌকাটি ডুবে যায় বলে ওই নারী জানান।
টেকনাফ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেনেন্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ জানিয়েছেন, আজ সকালেই নৌকাডুবির খবর পেয়েছিলেন তাঁরা। এরপর বিজিবির টহলদল নাফ নদে বাংলাদেশের জলসীমায় দুই ঘণ্টাব্যাপী তল্লাশি চালায়। তবে ঘটনাস্থল ও আশপাশে নৌকাডুবির কোনো আলামত কিংবা লাশের খোঁজ পায়নি বিজিবি।
অপরদিকে মিয়ানমারের বড়গজিরবিল থেকে বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, ভোররাতের ওই নৌকাডুবির ঘটনায় অনেকেই মারা গেছেন। ওই গ্রামের রোহিঙ্গারা নাফ নদের মিয়ানমার অংশে খোঁজাখুঁজি করে ১৪টি মরদেহ উদ্ধার করেন। নৌকার অধিকাংশ যাত্রী মিয়ানমারের বড়গজিরবিল ও রাইম্মারবিল গ্রামের বাসিন্দা বলেও জানা গেছে।
এদিকে বড়গজিরবিল গ্রামের এক রোহিঙ্গা নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোবাইলে জানিয়েছেন, গত শনিবার দুপুরে জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন ওই গ্রাম পরিদর্শন করেন। ওই সময় রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ তাঁদের ওপর সেনাবাহিনীর চলমান সহিংসতা, গণহত্যা,ধর্ষণের কথা জানিয়ে মানববন্ধন করেন।
এর কিছুক্ষণ পর কফি আনান ঘটনাস্থল থেকে চলে গেলে গ্রামের শতাধিক রোহিঙ্গা পুরুষকে সেনাবাহিনী ধরে নিয়ে যায়। এরপর শনিবার ও রোববার রাতে ওই দুটি গ্রামের ৫০ থেকে ৬০টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। সেনাবাহিনীর ওই হামলায় গৃহহারা নারী ও শিশু নাফ নদের পাড়ে এসে আশ্রয় নেয়।
এরপর গতকাল রোববার রাতে আশ্রয়হীন রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে কয়েকজন বাংলাদেশের পালিয়ে আসার সময় এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে স্থানীয়রা জানান। তবে বাংলাদেশের কোনো সূত্র এই মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।