ছয় বিষয়ে যৌথ সিদ্ধান্তে পৌঁছাল বিজিবি-বিএসএফ
যশোরে বিজিবি ও বিএসএফের রিজিয়ন কমান্ডার ও ফ্রন্টিয়ার আইজি পর্যায়ের চার দিনের সীমান্ত সম্মেলন শেষ হয়েছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছান তারা।
গত ২ সেপ্টেম্বর শহরের একটি হোটেলে শুরু হওয়া চার দিনের এ সম্মেলন আজ মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় শেষ হয়। এ সময় সম্মেলনের ব্যাপারে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।
যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, পেশাদারত্বের সঙ্গে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন, ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে রাত্রিকালীন যৌথ টহল বৃদ্ধি, সীমান্তবর্তী এলাকার জনসাধারণের আর্থসামাজিক উন্নয়ন, জনসচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ, অতিরিক্ত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান করা হবে। মাদক পাচার, অবৈধ অনুপ্রবেশ, মানব পাচার, স্বর্ণ পাচার রোধ, আগামী দিনে যৌথ খেলাধূলা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বিনিময়সহ বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে।
পূর্বানুমতি ছাড়া কোনো পক্ষের সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে কোনো ধরনের উন্নয়নমূলক কাজ করবে না এবং সীমান্তের ১৫০ গজের মধ্যে বন্ধ থাকা উন্নয়নমূলক কাজগুলো জয়েন্ট ভেরিভিকেশনের মাধ্যমে দ্রুত সমাধানের ব্যাপারে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে।
এক সংবাদ সম্মেলনে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলম জানান, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সম্মেলন শেষ হয়েছে। সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা ও আহতের ঘটনা বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়। এ প্রসঙ্গে বিজিবি-বিএসএফ ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর যৌথ বিবৃতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে সীমান্তহত্যা শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে সম্মত হয়েছে।
অপরদিকে বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি আয়ুষ মানি তিওয়ারি জানান, চার দিনের দ্বিপক্ষীয় সম্মেলনে বেশ কিছু বিষয় নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন তাঁরা। দুই দেশের মধ্যে এবং দুই বাহিনীর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে বিএসএফ বদ্ধপরিকর।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজ বিকেলেই ভারতীয় প্রতিনিধিদল তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করবে।
চার দিনের সীমান্ত সম্মেলনে বিজিবির রংপুর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে ২১ সদস্যের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করে। সম্মেলনে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিজিবির যশোর রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম আহমেদসহ উভয় রিজিয়নের অধীনস্থ সেক্টর কমান্ডার, বিজিবির স্টাফ অফিসার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর এবং যৌথ নদী কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অন্যদিকে, বিএসএফ সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের আইজি আয়ুষ মানি তিওয়ারির নেতৃত্বে ৩৭ সদস্যের ভারতীয় প্রতিনিধিদল সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। ভারতীয় প্রতিনিধিদলে বিএসএফ নর্থ বেঙ্গল ও গৌহাটি ফ্রন্টিয়ারের আইজি ছাড়াও সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের নোডাল অফিসার, ভারতের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ছিলেন।