মামুনুল হকের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তাসহ দুজনের সাক্ষ্য
হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণার ধর্ষণ মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাজমুল হক শ্যামলের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়।
সাক্ষ্য প্রদানকারীরা হলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার তৎকালীন পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম ও ডিএনএ পরীক্ষক রবিউল ইসলাম।
এ নিয়ে এই মামলায় ৪০ সাক্ষীর মধ্যে ২৬ জন আদালতে সাক্ষ্য দিলেন।
এর আগে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে মামুনুল হককে কাশিমপুর কারাগার থেকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাঁকে পুলিশ প্রহরায় পুনরায় কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক নয়ন জানান, জেরার সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ডিএনএ পরীক্ষক অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি। এতে প্রমাণিত হয়, ওই ডিএনএ প্রতিবেদন মিথ্যা ও বানোয়াট।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ জানান, ডিএনএ পরীক্ষক রবিউল ইসলাম তাঁর সাক্ষ্যে আদালতে বলেছেন, তোয়ালেতে পুরুষের বীর্য পাওয়া গেছে। সেই বীর্যে মামুনুল হকের রক্তের সঙ্গে মিল পাওয়া গেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাঁর সাক্ষ্যে বলেছেন, রয়েল রিসোর্টের ঘটনার পর রিসোর্টের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও বাদী জান্নাত আরা ঝর্ণা জানিয়েছেন, মামুনুল হক তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এখানে এনে ধর্ষণ করেছেন।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রয়েল রিসোর্টে একটি রুমে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণাসহ হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করে ছাত্রলীগ-যুবলীগ। খবর পুলিশ গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার সময় হেফাজত ও মাদ্রাসার ছাত্ররা রিসোর্টে হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেয়। ওই ঘটনার ১৫ দিন পর ওই বছরের ১৮ এপ্রিল মামুনুল হককে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে ঢাকা মহানগর তেজগাঁও বিভাগের পুলিশ গ্রেপ্তার করে। রয়েল রিসোর্ট কাণ্ডের ঘটনার ২৭ দিন পর ২০২১ সালের ৩০ এপ্রিল সোনারগাঁ থানায় হাজির হয়ে কথিত স্ত্রী জান্নাত আরা ঝর্ণা বাদী হয়ে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। ২০২১ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে জান্নাত আরা ঝর্ণাকে ধর্ষণের সত্যতা পেয়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর মামুনুল হকের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ধর্ষণের অভিযোগ গঠন করেন আদালত।