আদালত ব্যবহার করে ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হচ্ছে : সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ
পেশাজীবীনেতা কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমসহ ১৫ রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ। সংগঠনটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড.এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গনি চৌধুরী আজ মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, সব প্রতিবাদী কণ্ঠ নির্মূল করার সরকারি নীল নকশা অনুযায়ী আদালতকে ব্যবহার করে পেশাজীবী ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে এ রায় দেওয়া হয়েছে। যা কোনো অবস্থাতেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। এর আগে দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও যায়যায় দিন সম্পাদক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলায় সাত বছরের ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হয়। একইভাবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ বেশ কজন জাতীয় নেতার বিরুদ্ধে ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হয়। এর মূল লক্ষ্য হচ্ছে ভিন্নমত দমন এবং জনপ্রিয় রাজনীতিকদের নির্বাচনে অযোগ্য করে ক্ষমতা দখল করা।
পেশাজীবী নেতৃদ্বয় বলেন, দেশে আবার ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করতে সরকার সব ক্ষেত্রে বিচার বিভাগকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে। আমরা অবাক বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ করছি, বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে জনগণের মৌলিক, গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকারগুলো হরণ করা হচ্ছে। পেশাজীবীসহ গণতন্ত্রকামী মানুষকে বিচার বিভাগ দিয়ে চরমভাবে হয়রানি-নির্যাতন-নিপীড়ন করা হচ্ছে। যার ফলে দেশে একটা বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। মৌলিক অধিকার বাধাগ্রস্ত হলে মানুষ আদালতের শরণাপন্ন হয়। আজ উল্টো আদালতই মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছেন। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে গণমাধ্যমে তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ফরমায়েশি সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম একজন পেশাজীবী নেতা, হাবিবুর রহমান হাবিব নব্বইয়ের গণঅভ্যূত্থানের অন্যতম নায়ক, মোহাম্মদ শাহজান প্রবীণ রাজনীতিক ও সাবেক সংসদ সদস্য, আহসান হাবিব লিঙ্কন সাবেক সংসদ সদস্য, বেলাল আহমেদ জাতীয় নেতা, বাকিরা সবাই দেশপ্রেমিক রাজনীতিক। যাঁরা গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, গুম, খুন ও বিনাবিচারে মানুষ হত্যা বন্ধসহ এক দফার সংগ্রামে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন। সোচ্চার ছিলেন বর্তমান সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশানের বিরুদ্ধে। পেশাজীবীদের শীর্ষ এই দুই নেতা বলেন, কথায় কথায় যেভাবে ভিন্নমতাবলম্বীদের ফরমায়েশি সাজা দেওয়া হচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে সরকার দেশে ভিন্নমতের কোনো অস্তিত্বই রাখতে চায় না। যে আদালত হওয়ার কথা মানুষের ভরসাস্থল আজ সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ফরমায়েশি সাজা দেওয়ায় সেই আদালত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিবৃতিতে পেশাজীবী সংগঠনের এই দুই নেতা অবিলম্বে এই ফরমায়েশি রায় বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, এ ধরনের ফরমায়েশি রায়ের কারণে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের সর্বশেষ ভরসাটুকু শেষ হয়ে যাচ্ছে। আইনের শাসনের মূল কথা হলো আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান। অর্থাৎ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে সাধারণ নাগরিক সবার জন্য আইন একইভাবে প্রযোজ্য হবে। কিন্তু এখন সমাজে এর কোনো প্রতিফলনই দেখা করা যাচ্ছে না। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আদালতকে ব্যবহার করা হচ্ছে ভিন্নমত দমন ও ক্ষমতা দখলের ঢাল হিসেবে।