এ কে আজাদকে পদ থেকে অব্যাহতি, পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদকে পদ থেকে অব্যহতি দিয়েছে কমিটির সভাপতি নৌকা প্রতীকের প্রার্থী শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ। একইসঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের আরও ৯ নেতাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন অব্যাহতি পাওয়া নেতারা। তাদের দাবি, এই অব্যাহতি ‘একটা নাটক, যার কোনো ভিত্তি নেই।’ পরে পাল্টা সংবাদিক সম্মেলনে শামীম হক স্বতন্ত্রপ্রার্থী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে ধরেছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদসহ জেলা আওয়ামী লীগের ১০ নেতাকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক ও সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা হলেন—যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক আইভী মাসুদ, কোষাধ্যক্ষ যশোদা জীবন দেবনাথ, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুবল চন্দ্র সাহা, মনিরুল হাসান, আবুল বাতিন ও শহীদুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এ কে আজাদ, খলিফা কামাল উদ্দিন ও শাহ আলম মুকুল।
এর প্রতিবাদে আজ শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে ফরিদপুর ঝিলটুলি এলাকায় এ কে আজাদের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য বিপুল ঘোষ বলেন, ‘নির্বাচন বন্ধ করার কৌশল করছেন শামীম হক। ওনার আশপাশের বেশিরভাগ লোকই ক্রসফায়ারের আসামি। এ কে আজাদসহ যাদের জেলা আওয়ামী লীগের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে, এটা একটা নাটক, যার কোনো ভিত্তি নেই।’
স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদ বলেন, ‘১৮ নভেম্বর থেকে থেকে যে নির্যাতন শুরু করেছে নৌকাপ্রার্থীর সমর্থকরা, তা বৃহস্পতিবার রাতেও চলমান ছিল। ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে ভয় দেখাচ্ছে নৌকাপ্রার্থীর সমর্থকরা।’
এ কে আজাদ আরও বলেন, ‘শেষ মুহূর্তে এসে জনগণের সমর্থন হারিয়ে নিজেদের ক্যাম্পে নিজেরা আগুন দিয়ে, স্বতন্ত্রপ্রার্থীর সমর্থকদের নামে মামলা দেওয়ার চেষ্টা করছে নৌকার সমর্থকরা। তারা ৬০ থেকে ৬১ কেন্দ্র লিস্ট করেছেন। যেগুলো তারা দখল করে ভোট কাটার চেষ্টা করবেন।’
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, কোষাধক্ষ্য ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শাহ আলম মুকুলসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. ফারুক হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুবল চন্দ্র সাহা, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শওকত আলী জাহিদ, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা শাহ আলম মুকুল প্রমূখ। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগ, থানা আওয়ামী লীগসহ দলটির সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনে শামীম হক দাবি করেন, স্বতন্ত্রপ্রার্থী এ কে আজাদ ও তার সমর্থকরা বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি অফিস পুড়িয়ে নির্বাচন বানচালের অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তা ছাড়া গতকাল রাতে প্রায় ১৪টি স্থানে নৌকার নির্বাচনি অফিস পোড়ানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্বতন্ত্রপ্রার্থী শুধুমাত্র নেতাকর্মীদের নয়, জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে ও একের পর এক মামলা হুমকি দিচ্ছেন। এ ছাড়া মিথ্যা প্রপাগান্ডা ও গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে এ কে আজাদ ও তার সমর্থকরা নির্বাচনি পরিবেশ বিনষ্ট করছে।