একমাত্র শিশু ছেলেকে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টা
মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে একমাত্র ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেছেন দিনমজুর এক বাবা। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের ভাড়ারিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পেট্রলের আগুনে দগ্ধ ৯ বছরের শিশু তুহিনকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার সময় দগ্ধ হয়েছেন বাবা মহিন মিয়াও। পুলিশ তাঁকে আটক করে চিকিৎসা দিচ্ছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাবিল হোসেন বাবা মহিন মিয়া।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহ ও হতশা থেকেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন বাবা মহিন মিয়া।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী তুহিন সকালে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় বাবা মহিন মিয়া আকম্মিক তার শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। শিশুটি দৌড়ে এক প্রতিবেশীর বাড়িতে গেলে তারা পানি ঢেলে আগুন নেভায়। তবে তৎক্ষণে তার মুখমণ্ডলসহ শরীরের অন্তত্ব ৬০ ভাগ জলসে যায়। পরে স্থানীয়রা বাবা মহিন মিয়াকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়।
এ দিকে দগ্ধ তুহিনকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকায় রেফার্ড করে।
মহিন মিয়ার স্ত্রী শিউলি বেগম বছর খানেক আগে সৌদি আরবে গেছেন। সেখানে থাকা অবস্থায় অন্য এক ব্যক্তির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক হয়। গত মাসে তিনি বাড়িতে এসে ওই ব্যক্তিকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে সংসারে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিলে বাবা-ছেলের খুব কষ্টে দিন কাটছিল। আটকের পর মহিন স্থানীয়দের জানান ছেলেকে পুড়িয়ে মারার পর তিনি নিজেও আত্মহত্যা করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, মহিন মিয়া একজন মাদকসেবী। প্রায়ই তার শিশু ছেলেকে মারধর করেন।
ওসি মো. হাবিল হোসেন জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। দগ্ধ ছেলেটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অভিযুক্ত মহিন মিয়াও দগ্ধ হয়েছেন। তাঁকেও জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কারো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। আইনগত বিষয় প্রক্রিয়াধীন।
ওসি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে পারিবারিক কলহ ও হতাশা থেকেই এমন ঘটনা ঘটতে পারে।