আসামি গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে শৈলকুপা থানায় হামলা, আহত ৩০
আসামি গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে ঝিনাইদহের শৈলকুপা থানায় হামলার অভিযোগ উঠেছে গ্রেপ্তারেকৃত আসামির অনুসারীদের বিরুদ্ধে। একইসঙ্গে থানা ভাঙচুরের অভিযোগও রয়েছে। আজ রোববার (৯ জুন) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের টিয়ার শেল, গুলিতে আহতও হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এক তথ্য বলছে, এ ঘটনায় পুলিশসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
পরে ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এতে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বর্তমানে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়েছে। এরইমধ্যে শৈলকুপা থানা পরিদর্শন করেছেন খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. হাসানুজ্জামান।
ঝিনাইদহ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান, উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের ধাওড়া গ্রামের আওয়ামী লীগনেতা ও এজাহারভুক্ত আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোস্তাক সিকদারকে আজ রোববার গ্রেপ্তার করে আনুমানিক বেলা আড়াইটার থানায় নেওয়া হয়। কিছু সময় পরে কয়েকশ উশৃঙ্খল গ্রামবাসী নসিমন করিমন মটরসাইকেলে চড়ে থানার সামনে দিয়ে পৌরসভার দিকে চলে যায়। সেখান থেকে ফিরে বিকেল অনুমান ৩টার দিকে তারা মিছিল সহকারে থানার সমানে জড়ো হয়। আতঙ্কজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ায় থানার প্রধান ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ডাক-চিৎকার দিতে দিতে থানার প্রধান ফোটক ভেঙে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে বৃষ্টির মতো ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশ প্রথমে সাউন্ড গ্রেনেড এবং সর্টগানে গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় থানা চত্বর। এতে অন্তত আটজন পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হন।
ঘটনার সময় উপস্থিত ছিলেন শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার অমিত কুমার বর্মন। তিনি জানান, হঠাৎ করে শত শত জনতা থানা আক্রমণ করে বসে। সেসময় পুলিশ সদস্যরা বিশ্রামে ছিলেন। আক্রমণকারীরা বেপরোয়া ভাবে ইটপাটকেল ছুঁড়তে থাকেন। দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে পড়েন। এ ধরনের আক্রমণের বিষয়ে আগাম কোনো খবর ছিল না বলে জানান তিনি।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, শনিবার (৮ জুন) উপজেলার ধলহরাচন্দ্র ইউনিয়নের দাউটিয়া বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জেরে আজ রোববার এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ওই এলাকায় যায় এবং মো. ফরিদ হাসানের দায়ের করা আগের একটি মামলার এজাহারভুক্ত ৪৯নং আসামি মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে মোস্তাক সিকদারকে গ্রেপ্তার করে। এ আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই এলাকার আওয়ামী লীগের একটি গ্রুপের লোকজন উপজেলা শহরে ছুটে আসে। পরে তারা থানায় হামলা চালায়।
ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার আজিম-উল-আহসান জানান, ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিষয়টি উচ্চমহলকে অবহিত করা হয়েছে।