স্ত্রীর মামলায় কারাগারে উপজেলা চেয়ারম্যান
দায়িত্ব গ্রহণের ১০ দিনের মাথায় কারাগারে যেতে হলো নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা চেয়ারম্যান মাকসুদ হোসেনকে। দ্বিতীয় স্ত্রীর করা যৌতুকের জন্য নির্যাতনের মামলায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠান।
আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ উম্মে সরাবন তহুরা তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) রকিব উদ্দিন আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে মাকসুদ হোসেন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করেন আদালত।
গত ১১ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করেন মাকসুদ। এর আগে গত ৮ মে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হন তিনি। মাকসুদ নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি। মাকসুদ এর আগে বন্দরের মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
জানা যায়, গত ২৩ এপ্রিল মাকসুদের বিরুদ্ধে তার স্ত্রী সুলতানা বেগম (৪৩) যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগ এনে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলার আবেদন করেন। স্ত্রীর এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত বন্দর থানাকে মামলা রেকর্ড করার নির্দেশ দেন।
মামলায় ভুক্তভোগী অভিযোগ করেন, ১৯৯৮ সালে মাকসুদ হোসেন তাকে বিয়ে করেন। তাদের একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। কিন্তু বিয়ের সময় প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করেন মাকসুদ। সুলতানা বেগম বিষয়টি জানতে পেরে তাকে বাড়িতে তোলার জন্য চাপ দেন। কিন্তু মাকসুদ তার কথা শোনেননি। উল্টো বাবার বাড়ি থেকে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রির জন্য স্ত্রীকে তিনি চাপ দেন।
ওই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ১ কোটি টাকা। সেই সম্পত্তি বিক্রিতে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘদিন মাকসুদ তাকে স্ত্রীর মর্যাদা না দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে রেখে দেন। ২০২২ সালে এ বিষয়ে চাপ দিলে স্ত্রীকে তিনি সম্পত্তি বিক্রি করে আসতে বলেন। বারবার সম্পত্তি দাবি করায় ওই বছরের ১৩ নভেম্বর মাকসুদের বিরুদ্ধে যৌতুকের মামলা করেন তার স্ত্রী সুলতানা বেগম।
গত ২১ এপ্রিল রাতে মাকসুদ তার বন্ধুদের নিয়ে সুলতানা বেগমের বাবার বাড়িতে হাজির হন। এ সময় মামলা তুলে নিতে চাপ দেন এবং ওয়ারিশ সম্পত্তি বিক্রি করে মাকসুদের হাতে দিলে তাকে পুনরায় স্ত্রীর মর্যাদায় ঘরে তোলার প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাবে রাজি না হলে মাকসুদ তাকে হত্যার হুমকি দেন। একপর্যায়ে বাধা দিলে মেয়ে শ্রাবন্তীসহ সুলতানা বেগমকে মারধরের পর হুমকি দিয়ে চলে যান মাকসুদ। এ ঘটনায় ২৩ এপ্রিল আদালতে মামলার আবেদন করেন সুলতানা বেগম।