ভারি বৃষ্টিতে খালাস হচ্ছে না মোংলা বন্দরে আসা গম ও সার
বঙ্গোপসাগরে গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ায় টানা ভারি বৃষ্টিতে স্থবির হয়ে পড়েছে সাগর ও সুন্দরবন উপকূলের মোংলার জনজীবন। গতকাল বুধবার রাত থেকে শুরু হওয়া মুষলধারে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে আজ বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত। এতে মোংলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে মানুষের।
ভারি বৃষ্টির কারণে মোংলা বন্দরে অবস্থানরত অন্তত পাঁচটি জাহাজে বিদেশ থেকে আনা গম ও সার খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ ও বন্দরে আসা বাণিজ্যিক জাহাজের সংশ্লিষ্ট এজেন্ট এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার বিভাগ জানায়, বৈরী আবহওয়ায় মোংলা বন্দরের পাঁচটি বিদেশি জাহাজ থেকে খাদ্যপণ্য ও সার খালাস করা সম্ভব হচ্ছে না। পণ্য খালাসের জন্য বন্দরে গম, সার, ক্লিংকার, গ্যাস ও মেশিনারিজসহ মোট ১২টি জাহাজ অবস্থান করছে। এরমধ্যে দুটি গমের ও তিনটি সারের জাহাজ থেকে পণ্য খালাস করা সম্ভব হয়নি। অন্যান্য পণ্যের ক্ষতি হবে না বলেই বাকি সাতটি জাহাজ থেকে বৃষ্টির মধ্যেও পণ্য খালাস চলছে।
মোংলা বন্দরে আসা লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী খাদ্যপণ্যবাহী গমের জাহাজ এমভি প্রটেক্টর এসটি রাফায়েল ও মার্শাল আইল্যান্ডের পতাকাবাহী এম ভি এলিন কারেজ জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট রেনু শিপিংয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক কাজী মাহাবুবুল হক শুভ জানান, গত ১ জুলাই মোংলা বন্দরের হাড়বাড়িয়ার-৫ নম্বর বয়ায় ২১ হাজার ৮০০ মেট্রিক টন গম নিয়ে এম ভি প্রটেক্টর এসটি রাফায়েল এবং ১৬ জুলাই এম ভি এলিন কারেজ ২২ হাজার মেট্রিক টন গম নিয়ে হাড়বাড়িয়া-৬ নম্বর বয়ায় অবস্থান নেয়। সুন্দরবন সংলগ্ন পশুর নদের জয়মনির ঘোল এলাকায় ‘মোংলা সাইলো’ নামে সরকারি খাদ্য গুদামে এই গম খালাস করা হচ্ছিল। কিন্তু গতকাল থেকে ভারি বৃষ্টি হওয়ায় এই দুটি জাহাজ থেকে গম খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে।
এদিকে একই কারণে বন্ধ রয়েছে হংকংয়ের পতাকাবাহী এম ভি গ্রেট ইন্টেলিজেন্ট, লাইবেরিয়ার পতাকাবাহী এম ভি বাও ইয়াং ও পানামার পতাকাবাহী এম ভি ফেডারেল ইবুকি জাহাজ থেকে ড্যাপ ও ইউরিয়া সার খালাসও।
এম ভি বাও ইয়াং জাহাজের স্থানীয় শিপিং এজেন্ট ‘লিটমন্ড শিপিংয়ে’র ব্যবস্থাপক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, গত ২৬ জুলাই মরোক্ক থেকে ২৭ হাজার ৬০০ মেট্রিক টন সার নিয়ে মোংলা বন্দরে আসে জাহাজটি। প্রায় অর্ধেক সার খালাস করার পর গতকাল রাতে শুরু হওয়া ভারি বৃষ্টির কারণে খালাস কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্য দুটি জাহাজেও সার খালাস বন্ধ রাখা হয়েছে জানিয়ে সংশ্লিষ্ট শিপিং এজেন্টের প্রতিনিধিরা বলেন, এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক মো. মাকরুজ্জামান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ৩, ৪ ও ৫ নম্বর সতর্ক সংকেতের সময়ও বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিকসহ অবস্থান করা জাহাজে পণ্য খালাস বোঝাইয়ের কাজ চলমান থাকে। তবে ভারি বৃষ্টির সময় জাহাজে থাকা খাদ্য পণ্য নষ্ট হওয়ার শংকায় সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক ও জাহাজের শিপিং এজেন্টরা পণ্য খালাস কাজ বন্ধ রাখেন। তবে এই সময় মেশিনারিজ, ক্লিংকার, গ্যাস ও কন্টেনার পণ্য খালাস কাজ চলছে বলেও জানান তিনি।