বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, নোয়াখালীতে পানিবন্দি লাখো মানুষ
টানা ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে নোয়াখালীর কয়েক লাখ মানুষ। খাবার ও বাসস্থানের অভাবে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা। বৃষ্টি কমে এলেও বন্যা পরিস্থিতি রয়েছে প্রায় অপরিবর্তিত।
জেলার ৯ উপজেলার সবকটিতেই বসতঘর, গ্রামীণ সড়ক, মসজিদ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। খাল উদ্ধার ও পানি নিষ্কাশনে সেনাবাহিনীসহ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে স্থানীয়রা।
শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে বন্যা আক্রান্ত এলাকাগুলোতে। বেড়েছে ডায়রিয়াসহ নানা পানিবাহিত অসুখ। রোগীদের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের হিমশিম খাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়েছে।
নোয়াখালী আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, জেলা সদর, বেগমগঞ্জ, সেনবাগ, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, সুবর্ণচর উপজেলার বেশিরভাগ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন এসব উপজেলার বাসিন্দারা। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে আমন ধানের বীজতলা, শাক-সবজি। এছাড়া দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক উচ্চতায় জোয়ার হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিসের কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া সক্রিয় মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে আগামী ৪৮ ঘণ্টা ভারী বর্ষণ হতে পারে।
জেলা ত্রাণ ও পূনর্বাসন কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, জেলার ৯টি উপজেলার ৮৭ ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলো বন্যায় আক্রান্ত হয়েছে। পানিবন্দি মানুষ প্রায় ১৯ লাখ ৮০ হাজার। এরমধ্যে ৩৮৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৩৬ হাজার ১১৫ জন আশ্রয় নিয়েছে। পানিবন্দি এলাকায় ৮৮টি মেডিকেলটিম খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও চিকিৎসা সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।
নোয়াখালী জেলা প্রশাসক (ডিসি) দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, সার্বিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে। জেলার ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে অমানবিক জীবন যাপন করছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ও ১৭৫ মেট্রিকটন চাল বিতরণ করা হয়েছে।