পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে দুদকের অভিযান
কাগজ-কলমে ওষুধ ক্রয় এবং ঠিকাদারের কাছ থেকে গ্রহণ করা হলেও বাস্তবে স্টোর রুমে এর কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। আজ সোমবার (২৭ জানুয়ারি) দুপুরে পিরোজপুর জেলা হাসপাতালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অভিযানে এ অনিয়মের চিত্র ধরা পড়ে।
রেজিস্ট্রার খাতা পরীক্ষা করে তিন ধরনের ১৫ হাজার ৪৬৭টি ওষুধের এ অনিয়ম ধরা পড়ে।
হাসপাতালে দুদক অভিযান চালিয়ে পৌনে দুই কোটি টাকার ওষুধ সরবরাহের গড়মিলসহ বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে। আজ দুপুর ১২টা থেকে দিনভর এ অভিযান চালান দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন।
এ সময়ে দুই দালালকে আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হয়। সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন মো. রাহাত রব্বানী (২৪) এবং রাজিব মণ্ডল (২০)। দুজনই স্থানীয় শেফা ডায়াগনস্টিক ক্লিনিকের কর্মী বলে জানা গেছে।
দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. জাকির হোসেন জানান, জেলা হাসপাতালের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে দুদকের ঢাকা অফিসের নির্দেশনায় আজ দুপুরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বিভিন্ন রেজিস্ট্রার খাতা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখতে পান ওষুধ কেনা হয়েছে এবং এজন্য ঠিকাদারকেও টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এমনকি স্টোরেও সংরক্ষিত দেখানো হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে হাসপাতালে ওষুধ পৌঁছায়নি কিংবা সেগুলো স্টোরেও সংরক্ষণ করা হয়নি। কমপক্ষে তিনটি ওষুধের ক্ষেত্রে তারা এমনটি পেয়েছেন। সকল কাগজপত্র পর্যালোচনা করে অনিয়মের বিস্তারিত জানাতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
মো. জাকির হোসেন আরও জানান, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওষুধসহ আরও কিছু মালামাল সরবরাহ করতে না পারায় তারা সিকিউরিটি হিসেবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এক কোটি ৭৬ লাখ ২১ হাজার ৬১২ টাকার তিনটি চেক দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা। তবে টেন্ডারের মালামাল না দিয়ে এভাবে চেক আদান-প্রদানের কোনো নিয়ম নেই।
অভিযানের শুরুতেই দুদক দল হাসপাতালে প্রবেশকালে ভেতর থেকে দুই দালালকে আটক করে মোবাইল কোর্টে প্রত্যেককে ১৫ দিনের জেল ও ১০০ টাকা করে জরিমানার আদেশ দিয়ে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন ও হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক মো. মিজানুর রহমান জানান, এ ক্রয় প্রক্রিয়াটি আগের সিভিল সার্জনের সময়ে সম্পন্ন হয়েছিল। তাই এ বিষয়ে তদন্ত না করে তিনি কিছুই বলতে পারবেন না।