‘অপরাধবোধ’ থেকে কলাকুশলীদের পাশে নিপুণ
করোনায় বিপাকে পড়া সহকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন চিত্রনায়িকা নিপুণ। তিনি নানাভাবে চেষ্টা করছেন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট কলাকুশলীদের জন্য কিছু করতে। ‘অপরাধবোধ’ থেকেই তিনি সবার পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। এ জন্য সহযোগিতা নিচ্ছেন তিনি। প্রথমে সহযোগিতা নেওয়া শুরু করেছেন নিজের পরিবার থেকে।
কীসের অপরাধবোধ জাগল নায়িকা নিপুণের হৃদয়ে?
চিত্রনায়িকা নিপুণ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের প্রকোপের পর ধীরে ধীরে সবখানে লকডাউন শুরু হয়। আমিও নিজের পার্লারের কর্মচারীদের বেতন দিয়ে পার্লার বন্ধ করে দিই। তার কিছু দিন পর থেকেই এফডিসির বিভিন্ন সংগঠন থেকে ফোন দিয়ে তাদের সমস্যাগুলো শেয়ার করত। যেহেতু কারো হাতে কোনো কাজ নেই, তাই নিজেও উপলব্ধি করতে পারি, কেমন আছে আমাদের চলচ্চিত্রের কলাকুশলী ভাইয়েরা।’
পরের গল্পটা শুনুন নিপুণের ভাষ্যে :
এরপর যখন গণমাধ্যমে একের পর এক নিউজ পড়লাম, ভালো নেই চলচ্চিত্রের শিল্পী ও কলাকুশলীরা; নিজের মধ্যে এক ধরনের অপরাধবোধ কাজ করল। তখনই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমার সাফল্যের সাঙ্গে যাঁদের ঘাম যুক্ত, তাঁদের পাশে আমি অবশ্যই দাঁড়াব। তার পরই শিল্পী সমিতিতে মিশা সওদাগর ভাই ও জায়েদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করি।
সব কিছু জেনে খুশি হই যে শিল্পীরা কেউ না খেয়ে নেই। কারণ শিল্পী সমিতি সমস্যায় থাকা সবার বাসায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাঠাচ্ছে নিয়মিত। তবে কলাকুশলীরা, যাঁরা ক্যামেরার পেছনে কাজ করেন, তাঁরা ভালো নেই। লজ্জায় কারো কাছে চাইতেও পারছেন না। এঁদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুপ্রেরণা দিলেন জায়েদ খান।
এরই মধ্যে রোজা শুরু হলো, এফডিসির সংগঠনগুলো বন্ধ, এতে ইফতার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সিকিউরিটি গার্ডসহ বেশ কয়েকজন। তাঁদের জন্য আমি প্রতিদিনই খিচুড়ি রান্না করে পাঠাই।
বাসায় এসে চিন্তা করলাম, একটা ফান্ড গঠন করব, কলাকুশলীদের যে সংগঠন আছে, তাঁদের পাশে দাঁড়াব। কিন্তু কীভাবে করব জানি না।
প্রথমে আমার পরিবারের লোকদের কাছ থেকে টাকা তোলা শুরু করলাম। তারপর আমার পরিবারের যাঁরা দেশের বাইরে আছেন, তাঁদের কাছ থেকে টাকা তোলা শুরু করলাম।
শিল্পীদের মধ্যে সবার সঙ্গেই আমার ভালো সম্পর্ক, তবে অনেকেই নিজের মতো কাজ করছেন, যে কারণে সবার কাছে চাওয়া যায় না। তবে নায়িকা সোনিয়া লন্ডনে আছেন, তাঁর সঙ্গে আমার প্রায়ই কথা হয়, তাঁকে বিষয়টি জানানোর পর কিছু টাকা পাঠালেন। ‘ধূসর কুয়াশা’ নামের একটি ছবি করেছিলাম, সেই ছবির হিরো মুন্না ভাইয়ের কাছে সাহায্য চাইলাম।
চলচ্চিত্র ব্যবস্থাপক সমিতি ও সহকারী ব্যবস্থাপক সমিতিকে ৭০ হাজার টাকা দিতে পেরেছি। আগামী সোমবার সহকারী পরিচালক সমিতিকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। নায়ক সাইমনের কাছে সাহায্য চেয়েছি। তিনিও পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন।
আমি মনে করি, সবাই মিলে যদি একটা ভালো ফান্ড করে আমরা কাজ করি, তবে চলচ্চিত্রের কেউ না খেয়ে মারা যাবে না। শিল্পী সমিতিকে অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ মিশা ভাই, জায়েদ খানকে; সমিতির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক সহযোগিতা করার জন্য।