আন্তর্জাতিক মানের বুলি না আওড়িয়ে একবারে করে দেখালাম : আরিফিন শুভ
সাদা পাঞ্জাবি, মাথায় টুপিতে লেখা ‘বঙ্গবন্ধু’; হাজির হয়েই নজর কাড়লেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আরিফিন শুভ। ততক্ষণে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কানায় কানায় পূর্ণ রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের স্টার সিনেপ্লেক্স। বছরের বহুলআলোচিত ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো।
নায়ককে এমন লুকে দেখে বিশেষ অতিথিদের ছবি তোলার ভিড়। সে ভিড় সামলে আরিফিন শুভ কথা বলেছেন এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে।
প্রথমেই আপনাকে ‘এক্সট্রিম’ অভিনন্দন, ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার জন্য। গান দিয়ে শুরু করা যাক; সিনেমাটির প্রচারণায় ‘কইরা দেখা’ শিরোনামে একটি র্যাপ গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। গানটির কথা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে, কাউকে উদ্দেশ্য করে গানের কথা বলা হয়েছে কি?
হাসতে হাসতে আরিফিন শুভ বললেন, “একদমই ব্যাপারটি এমন নয়। প্রথম কথা, এটি প্রচারণার জন্য গান। সে কারণে এ ধরনের কথা ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা বলার চেষ্টা করেছি, আমাদের এবার নিজস্ব গল্প বলার সময় এসেছে। আমাদের এবার মিথ্যা আশ্বাস না দিয়ে কিছু করে দেখানোর সময় এসেছে। মুখে বললাম আন্তর্জাতিক আর কাজের সময় ‘আন্ত’—এর ‘আ’ নেই। আমি এটাকে কোনো ব্যক্তি, কোনো গ্রুপ, কোনো কোম্পানি, কোনো একজন, দুজন, তিনজন... এমন কাউকে কিছু বলিনি।”
একই দিনে কলকাতায় ‘অভিযাত্রিক’ নামের একটি সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে। যেটি আপনার করার কথা ছিল। ভিসা জটিলতায় সেটা সম্ভব হয়নি, কোনো আক্ষেপ কাজ করছে?
“একেবারেই নেই। ‘অভিযাত্রিক’ সত্যজিৎ রায়ের একটি ধারাবাহিক, কিন্তু ওই সিনেমার চেয়ে আমার কাছে হাজারগুণে বড় পাওয়া শ্যাম বেনেগালের পরিচালনায় বঙ্গবন্ধু চরিত্র”, বলছিলেন শুভ।
আপনার ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমা দিয়ে ২০টি বন্ধ সিনেমা হল খুলছে। ব্যাপারটি কেমন লাগছে? নায়কের উত্তর, ‘ব্যাপারটি একভাবে খুবই আনন্দের, আবার একইভাবে খুবই দুঃখের। কিন্তু, আমার জায়গা থেকে এটা বড় কষ্ট ও আক্ষেপের... আমার জীবনে এখন পর্যন্ত শারীরিক ও মানসিকভাবে সবচেয়ে বেশি কষ্ট করা সিনেমা, যদি আমরা আরও বেশি হল নিয়ে আসতে পারতাম। কিন্ত তাঁর (সিনেমা হল) অস্তিত্বই নেই।’
এর আগে ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমা নিয়ে উপস্থিত সাংবাদিকদের আরিফিন শুভ বলেছেন, “অসংখ্য কাজ করলে ইন্ডাস্ট্রির লাভ হবে না। একসঙ্গে আমিও অনেক কাজ করতে পারি। কিন্তু, তা আমি করি না। তা করে সংখ্যা বাড়াতে চাই না। অনেক ত্যাগ স্বীকার করে কাজটি করেছি। যে পরিশ্রম আমি করেছি, দর্শকদের কাছে প্রশ্ন— সে পরিশ্রম না করলে কি ‘মিশন এক্সট্রিম’ হতো না? অবশ্যই হতো। করেছি শুধু একটি কারণেই, মুখে বড় বড় কথা বলার চেয়ে, ‘আন্তর্জাতিক-আন্তর্জাতিক মানের’ বুলি না আওড়িয়ে একবারে করে দেখালাম আন্তর্জাতিকের মানেটা আসলে কী, সংজ্ঞা ও উদাহরণসহ। আমাদের দেশে বাজেট ও টেকনিশিয়ান অপ্রতুল। যা আছে সে আয়ত্তের মধ্যে আমরা চেষ্টা করেছি। কতটুকু পেরেছি, তা দর্শক সিনেমাটি দেখে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করবেন।”
নায়ক আরও যুক্ত করে বলেছেন, ‘মুখে বড় বড় কথা বলে আর ফাঁকা আওয়াজ দিয়ে দর্শককে হলে আনার দিন চলে গেছে। এখন কিছু করে দেখিয়ে তাঁদের হলে টানতে হবে। আমি মিশন এক্সট্রিমে কিছু করে দেখানোর চেষ্টাটাই করেছি।’
ইতিহাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশসহ বিশ্বের পাঁচটি দেশে আজ ৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) একযোগে একই দিনে মুক্তি পেয়েছে ‘মিশন এক্সট্রিম’।