‘আপনারা বাসায় থাকুন, খাবার পৌঁছে যাবে’
করোনাভাইরাসের আতঙ্কে বন্ধ হয়েছে সিনেমা হল, শুটিংও বন্ধ। বাসায় রয়েছেন তারকা শিল্পীরা। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী সবাইকে ঘরে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরাও। তবে করোনাভাইরাস আতঙ্কে সবাই যখন ঘরে বসে আছেন, তখনো এফডিসিতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বুলু বারী, রানু বেগম, সালাম, বুরহান উদ্দিনের মতো এক্সট্রা শিল্পীরা।
এই শিল্পীদের নিয়ে সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের প্রকাশ করা হয় ‘করোনার চেয়ে ভাতের কষ্ট বেশি!’শিরোনামের একটি খবর।
খবরটি পড়ে এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করে, পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন নায়িকা মিষ্টি জান্নাত। অসচ্ছল শিল্পী ও কলাকুশলীদের পাশে দাঁড়ানোর আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। গতকাল বুধবার রাজধানীর শাহবাগে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক, গ্লাভস, সাবানসহ বিভিন্ন উপকরণ বিতরণ করেন।
মিষ্টি জান্নাত বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের চলচ্চিত্রের অবস্থা খুব ভালো নয়, কমেছে সিনেমা নির্মাণ, এ কারনে বেকার হয়ে পড়েছেন অনেক শিল্পী। অনেক শিল্পী ও কলাকুশলী অসচ্ছল হয়ে পড়েছেন। যে কারণে তাদের অবস্থা খুব একটা ভালো হওয়ার সুযোগ নেই। করোনার চেয়ে ভাতের কষ্ট বেশি! শিরোনামের খবরটি পড়ে শিল্পী হিসেবে খারাপ লেগেছে। যে কারণে আমার যতটা সামর্থ রয়েছে, ততটা পাশে দাঁড়াতে চাই। আমি চাল, পেঁয়াজ, ডাল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
যেহেতু করোনাভাইরাসের কারণে জনসমাগম নিষেধ করেছে সরকার। তাই ঘর থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে মিষ্টি বলেন, ‘এখন সবার বাসায় সময় কাটনো উচিত। করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার একটিইমাত্র উপায়। যে কারণে আপনাদের এফডিসিতে আসতে হবে না। আপনারা বাসায় থাকুন, খাবার পৌছে যাবে। এরই মধ্যে এফডিসির সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছি। সবাই সহযোগিতা করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন। ১০০ মানুষকেও যদি ১০ দিনের খাবার পৌঁছে দিতে পারি তবে শিল্পী হিসেবে শান্তি পাব। আগামী দুদিনের মধ্যে অসচ্ছল শিল্পী ও কলাকৌশলীদের বাড়ি পৌছে দেব ইনশা আল্লাহ।
বিত্তবানদের দৃষ্টি আকর্ষন করে মিষ্টি বলেন, ‘আমাদের সামর্থ কম, তবে সমাজে অনেক বিত্তবান রয়েছেন, যাদের অর্থের অভাব নেই। আমি তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আপনারা সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ান। আপনার একটু সহযোগিতা, করোনার এই সময় একটি মানুষকে ঘরে থাকায় উৎসাহ দেবে, এতে করে পুরো দেশ বেঁচে যাবে করোনাভাইরাস থেকে।’ তিনি আরো জানান, একটি চলচ্চিত্রের বিভিন্ন অংশে আমরা অনেককেই দেখি। যাঁদের কোনো সংলাপ নেই, কেন্দ্রীয় বা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলোর পাশে তাঁদের দেখা যায়, তাঁদের মূলত এক্সট্রা শিল্পী বলা হয়। এফডিসিতে এক্সট্রা শিল্পীর সংখ্যা প্রায় দুই হাজার। এঁদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন পেশায় যুক্ত থাকলেও বুলু-রানুদের মতো অসহায় শিল্পী রয়েছেন পাঁচ শতাধিক, যাঁদের অর্থ উপার্জনের অন্য কোনো পথ নেই।
এরই মধ্যে নিজের ফ্যাশন হাউস ও রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দিয়েছেন মিষ্টি জান্নাত। ২৫ জন কর্মচারীকে অগ্রিম বেতন দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছেন।
শুধু নায়িকা নন, মিষ্টি জান্নাত দন্ত্যচিকিৎসকও। তাঁর অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘তুই আমার রানি’। ছবিটি গত বছর মুক্তি পায়। মিষ্টি জান্নাত অভিনীত বেশ কয়েকটি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। দেশের পাশাপাশি ওপার বাংলার সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন।