ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে চঞ্চল চৌধুরী বললেন, ‘মানবতার জয় হোক’
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী গত সোমবার মা দিবসে মায়ের সঙ্গে তোলা একটি স্থিরচিত্র প্রকাশ করেন। আর তারপর সামাজিক পাতায় তাঁর ধর্মপরিচয়ের প্রশ্ন তুলে নেটিজেনদের একাংশের কটাক্ষের শিকার হন তিনি।
ওই পোস্টের কমেন্ট বক্সে কিছু ফেসবুক ব্যবহারকারী সাম্প্রদায়িক মন্তব্য করে। পরে চঞ্চল চৌধুরী সেসব মন্তব্য দেখে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এরপর অভিনেতার অনুরাগী, শুভাকাঙ্ক্ষী ও বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অনেকে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন।
অনেকে নিজের প্রোফাইল পিকচার বদলে ফেলেন। সেখানে দেখা যায় চঞ্চল চৌধুরী ও তাঁর মায়ের ছবি। তাঁরা প্রোফাইল পিকচার বদলিয়ে হ্যাশট্যাগে লেখেন ‘চঞ্চল চৌধুরী ইজ আওয়ার ব্রাদার’, ‘তোমার মা আমার মা’, ‘আমার মা, তোমার মা’, ‘স্টপ সাইবার বুলিং’, ‘হোক প্রতিবাদ’।
রাত পোহালেই ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করে চঞ্চল চৌধুরী মানবতার জয়ের কথা বলেছেন।
সেই বিবৃতিতে বাদ যায়নি সাম্প্রতিক প্রসঙ্গ। নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে চঞ্চল চৌধুরী লিখেছেন, ‘আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নিয়ে গত কয়েক দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক আলোচনা আর সমালোচনার ঝড় বয়ে গেল। এতে আমি শুধুই বিব্রত নই, সেই সাথে মানসিকভাবে খুব অস্বস্তিকর সময় পার করছি।’
চঞ্চল লেখেন, ‘এখন নিশ্চয়ই আমার পরিচয় নিয়ে কারও কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। ভবিষ্যতে নতুন করে আমার পরিচয় জানার জন্য কেউ আগ্রহী হলে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে ইনবক্স করলে ধন্য হব। তবে পরিচয়ের নামে এ রকম পরিস্থিতি কাম্য নয়।’
ধর্মপরিচয় প্রসঙ্গে চঞ্চল চৌধুরীর স্পষ্ট ভাষ্য, ‘আমার পরিচয়... আমি মানুষ, আমি বাংলাদেশি, আমি বাঙালি... আর ধর্মপরিচয়টা প্রত্যেকের মতোই জন্মগত। এতে কারও কোনো আপত্তি থাকলেও আমার কোনো সমস্যা নেই। আর সবচেয়ে বড় যে পরিচয়ে আপনারা আমাকে চেনেন... সেটা হলো, আমি একজন শিল্পী... আমার কাছে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই সমান এবং আপন।’
ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে এ বিশিষ্ট অভিনেতা আরও লেখেন, ‘ঈদ মুবারক... সারা পৃথিবীজুড়ে যে করোনা সংকট চলছে, এই দুঃসময়ে সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন... আসুন, আমরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিই।’