এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে জিৎ গাঙ্গুলির শোক
বাংলা গানের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের মৃত্যুতে সংগীতাঙ্গনে শোকাবহ বিরাজ করছে। দীর্ঘদিন ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে গতকাল সন্ধ্যায় হার মানেন বাংলাদেশি চলচ্চিত্রের প্লেব্যাক সম্রাট। তাঁর মৃত্যুতে বিভিন্ন অঙ্গনের তারকা থেকে শুরু করে শোক জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। এবার শোক ও সহমর্মিতা প্রকাশ করলেন ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী ও সুরকার জিৎ গাঙ্গুলি।
নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক হ্যান্ডেলে এন্ড্রু কিশোরের একটি ছবি শেয়ার করে জিৎ গাঙ্গুলি লিখেছেন, বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ এই সংগীতশিল্পীর মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাহত তিনি। প্রয়াত ও তাঁর পরিবারের জন্য প্রার্থনাও করেছেন জিৎ।
গতকাল সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টা ৫৫ মিনিটে এন্ড্রু কিশোর রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বোনের বাসায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৫ বছর।
বরেণ্য কণ্ঠশিল্পী এন্ড্রু কিশোরের শেষ ইচ্ছে ছিল, মায়ের পাশে যেন তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। তাঁর সেই ইচ্ছে অনুযায়ী মায়ের পাশে সমাহিত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রয়াতের ভগ্নিপতি ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস।
এন্ড্রু কিশোরের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তাঁরা দুজনই অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। মেয়ে মিনিম এন্ড্রু সংজ্ঞা সিডনিতে গ্রাফিক ডিজাইন আর ছেলে জে এন্ড্রু সপ্তক মেলবোর্নে ফ্যাশন ডিজাইনিংয়ে পড়ছেন। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁরা দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ডা. প্যাট্রিক বিপুল বিশ্বাস এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাঁকে তাঁর মায়ের পাশে সমাহিত করা হবে। মৃত্যুর আগে এন্ড্রু কিশোর নিজেই বলে গেছেন, তাঁকে যেন মায়ের পাশে সমাহিত করা হয়। এটাই ছিল তাঁর শেষ ইচ্ছে। তবে কখন, এটা এখনো ঠিক হয়নি। তাঁর সন্তানেরা দেশে ফিরলে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
১৯৫৫ সালে এন্ড্রু কিশোরের জন্ম রাজশাহীতে। সেখানেই কেটেছে তাঁর শৈশব ও কৈশোর। এন্ড্রু কিশোর প্রাথমিকভাবে সংগীতের পাঠ শুরু করেন রাজশাহীর আবদুল আজিজ বাচ্চুর কাছে। একসময় গানের নেশায় রাজধানীতে ছুটে আসেন। মুক্তিযুদ্ধের পর তিনি রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, আধুনিক গান, লোকগান ও দেশাত্মবোধক গানে রেডিওর তালিকাভুক্ত শিল্পী হন।
বাংলা গানের কিংবদন্তি এই সংগীতশিল্পী ‘প্লেব্যাক সম্রাট’ হিসেবেও পরিচিত। বাংলা চলচ্চিত্রের গানে তাঁকে বলা যেতে পারে এক মহাসমুদ্র। কয়েক দশক ধরে সেই সমুদ্রে সাঁতার কেটে চলেছেন শ্রোতারা। ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যখানে’, ‘পৃথিবীর যত সুখ আমি তোমারই ছোঁয়াতে খুঁজে পেয়েছি’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘বেদের মেয়ে জোছনা আমায় কথা দিয়েছে’, ‘তুমি আমার জীবন আমি তোমার জীবন’, ‘ভালো আছি ভালো থেকো’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘চোখ যে মনের কথা বলে’সহ অসংখ্য শ্রোতাপ্রিয় গান রয়েছে তাঁর।