কলাকুশলী ছাড়াও মধ্যবিত্ত পরিবারের পাশে অনন্ত জলিল
করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক দূরত্বের বিকল্প নেই। তাই এ লড়াইয়ের একটাই স্লোগান ‘ঘরে থাকুন, নিরাপদে থাকুন’। বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। বাংলাদেশেও দিনে দিনে এ মিছিল লম্বা হচ্ছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মসজিদসহ বন্ধ রয়েছে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন অফিস। বন্ধ বিনোদন কেন্দ্রগুলো। চলচ্চিত্রকর্মীদের মতোই বিপাকে পড়েছে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারছে না অনেকে, হাত পাততে পারছে না লোকলজ্জায়।
চলচ্চিত্র শিল্পী ও কলাকুশলীর পাশাপাশি এবার মধ্যবিত্তদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন নায়ক-প্রযোজক অনন্ত জলিল। গতকাল ৭২ জন চলচ্চিত্র কলাকুশলীর জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দেওয়ার সময় এমন কথা জানান অনন্ত। রোববার ৫২ জন সহকারী পরিচালক ও ২০ জন ড্রেসম্যানকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন তিনি।
অনন্ত জলিল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘চলচ্চিত্রকর্মীদের যাঁরা আমার কাছে আবেদন করেছেন, আমি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এটা চলচ্চিত্রের মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্ব। এ ছাড়া এখন আমি বেশি নজর দিচ্ছি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর দিকে। কারণ তাঁরা লাইনে দাঁড়িয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারে না, আবার লজ্জায় কারো কাছে চাইতেও পারে না।’
অনন্ত আরো বলেন, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ, যে কারণে অনেক শিক্ষক বেতন পাননি। মসজিদের ইমামরা ঠিকমতো মাসিক সম্মানী পাচ্ছেন না। এমনকি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন প্রকৌশলী আমাকে ফোন দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছেন। আমি তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। সবাই দোয়া করবেন। দ্রুত যেন এই করোনা থেকে আমরা মুক্ত হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারি।’
সহকারী পরিচালক সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক আজাদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ চারদিকে ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ছে। এই রোগ প্রতিরোধে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে পুরো বিশ্ব। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। আমাদের সদস্য যাঁরা ঢাকায় বাস করছেন, তাঁদের বেশির ভাগই লকডাউনে আছেন। যে কারণে ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। বিষয়টি জানার পর অনন্ত জলিল ভাই আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন। গতকাল ৫২ জন সহকারী পরিচালক ও ২০ জন ড্রেসম্যানকে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, যে পরিমাণ সামগ্রী দিয়েছেন, আমাদের ৫২ জন সদস্য অন্তত এক সপ্তাহ খেয়ে বাঁচতে পারবে। সমিতির পক্ষ থেকে অনন্ত ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ, এই মহৎ কাজটি করার জন্য। ধন্যবাদ ভাইকে, দুঃসময়ে আমাদের পাশে থাকার জন্য।’
চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, নায়ক ও ব্যবসায়ী এম এ জলিল অনন্ত, যিনি চলচ্চিত্রে অনন্ত জলিল নামে পরিচিত। ২০১০ সালে ‘খোঁজ : দ্য সার্চ’ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডে যাত্রা শুরু করেন। গার্মেন্টস ব্যবসার পাশাপাশি চলচ্চিত্রে বিনিয়োগ করেন নিজের প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে।
অনন্ত জলিল সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে তিনটি এতিমখানা নির্মাণ করেছেন। মিরপুর ১০ নম্বর, বাইতুল আমান হাউজিং ও সাভার মধুমতি মডেল টাউনে আছে এতিমখানাগুলো। এ ছাড়া সাভারের হেমায়েতপুরের ধল্লা গ্রামে সাড়ে ২৮ বিঘার ওপর একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন অনন্ত জলিল। তিনি ঢাকার হেমায়েতপুরে অবস্থিত বায়তুস শাহ জামে মসজিদের নির্মাণকাজেও অবদান রাখেন।