শেষ শয্যায় সরোজ খান
মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পর শুক্রবার সকালে অন্তিম শয়ান হলো বলিউডের কিংবদন্তি কোরিওগ্রাফার সরোজ খানের। দীর্ঘদিন মেধা ও মনন দিয়ে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। তাঁকে মুম্বাইয়ের বান্দ্রার গুরু নানক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। রাত আড়াইটার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ৭১ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন সরোজ।
বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে ভারতের বিনোদনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বলিউড বাবল প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মুম্বাইয়ের মালাডে সরোজ খানের শেষকৃত্য হয়েছে। পিটিআইকে এ তথ্য জানান সরোজ খানের মেয়ে সুকন্যা খান।
সুকন্যা খান আরো জানিয়েছেন, তিন দিন পর তাঁর মায়ের স্মরণে প্রার্থনার আয়োজন হবে। তাঁর মায়ের কোভিড-১৯ পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছিল। ঠাণ্ডায় তাঁর শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। তিনি আরো জানান, দু-তিন দিনের মধ্যে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়ার কথা ছিল।
পিটিআইকে সুকন্যা খান বলেন, ‘সকাল ৭টার দিকে আমরা তাঁকে সমাধিস্থ করেছি। তিন দিন পর তাঁর স্মরণসভা হবে।’
গত ২০ জুন শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন সরোজ খান। তাঁর করোনাভাইরাস পরীক্ষার ফল অবশ্য নেগেটিভ এসেছিল। মৃত্যুকালে সরোজ তাঁর স্বামী বি সোহানলাল, ছেলে হামিদ খান এবং মেয়ে হিনা খান ও সুকন্যা খানকে রেখে গেছেন।
সরোজ খান শেষ ভিডিও-বার্তায় বলেছিলেন করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সমর্থন করতে। এই যুদ্ধে জিতবেন বলেও দৃঢ়প্রত্যয় ছিল তাঁর। সেইসঙ্গে জনসাধারণকে ঘরে থাকার আহ্বানও জানিয়েছিলেন সরোজ। আরেক ভিডিওতে সরোজ খান ডাক্তার, নার্স, পুলিশ ও করোনায় সামনের সারির যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছিলেন।
মাত্র তিন বছর বয়সে ব্যাকগ্রাউন্ড ড্যান্সার হিসেবে কাজ শুরু করেন সরোজ খান। ১৯৭৪ সালে ‘গীতা মেরা নাম’ ছবিতে কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। দুই হাজারের বেশি গানে কোরিওগ্রাফ করেছেন। সর্বশেষ ‘কলঙ্ক’ ছবির ‘তাবাহ হো গ্যায়ে’ গানে মাধুরী দীক্ষিতের কোরিওগ্রাফি করেছেন সরোজ খান।
১৯৪৮ সালে জন্ম নেওয়া সরোজ খানের বলিউড ক্যারিয়ার শুরু হয় শিশুশিল্পী হিসেবে। পঞ্চাশের দশকে ব্যাকআপ নৃত্যশিল্পী বা ‘এক্সট্রা’ হিসেবে বেশ কিছু সিনেমায় কাজ করেন সরোজ খান।
সত্তর দশকে সহকারী নৃত্যপরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন সরোজ খান। আশি দশকে শ্রীদেবী ও মাধুরী দীক্ষিতের মতো বলিউড তারকাদের সঙ্গে কাজ শুরুর পর বলিউডে সরোজ খান নামটি পরিচিত হয়ে ওঠে।
‘দেবদাস’ সিনেমার ‘দোলা রে দোলা’, ‘তেজাব’ সিনেমার ‘এক দো তিন’ গানগুলোর কোরিওগ্রাফি করে সরোজ খান বিপুল খ্যাতি অর্জন করেন।